মাতৃভূমির খবর। উপজেলা প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-রাজনগরের সংযোগ সড়কের পুরাতন সেতুটি দুই বছর ধরে ভেঙে যাওয়ায় এই পথে চলাচলকারীরা দুর্ভোগে রয়েছেন। সেতু ভাঙা থাকায় স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত কাঠ ও বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা এ পথে চলাচলকারীদের। তবে এ পথ দিয়ে সবধরনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা ব্যায়ে কুলাউড়ার বরমচাল থেকে রাজনগরের করিমপুর পর্যন্ত ৮.৮৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে কুলাউড়া অংশে ৫.৮৫ কিলোমিটার এবং রাজনগর অংশে ৩ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ করা হয়। সড়ক পাকাকরণের প্রকল্পে এ পথের পুরাতন কালভার্ট ও সেতুগুলো নতুন করে নির্মাণের অন্তর্ভুক্ত ছিলোনা। ২০১৯ সালের জুন মাসের দিকে কুলাউড়ার বরমচাল থেকে রাজনগরের মুন্সিবাজার সড়কের বড়ছড়া খালের উপর থাকা জরাজীর্ণ সেতুটি ভেঙে দেবে যায়। এরপর থেকে ডানকান ব্রাদার্স লিমিটেডের বরমচাল ও করিমপুর চা বাগানের ভেতর দিয়ে নির্মিত পাকা সড়কটিও অনেকটাই যানচলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুলাউড়ার ভূকশিমইল, ভাটেরা ও বরমচাল ইউনিয়নের মানুষ সহজেই রাজনগরের মুন্সিবাজার হয়ে জেলা ও বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করতেন। আরসিসি সেতুটি ভেঙে ধসে পড়েছে খালের ওপর। ভেঙে পড়া সেতুর পাশ দিয়ে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের খুঁটি ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে শুধুমাত্র পায়ে হেটে ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে হচ্ছে। ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রউফ আলী, অসিত ভৌমিজ, নারায়ণ দাশ জানান, সড়কটি আগে কাঁচা ছিলো। দুই বছর আগে এটি পাকা করা হয়। বরমচাল ও করিমপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ অনেক বছর আগে বড়ছড়ার ওপর থাকা আরসিসি সেতুটি নির্মাণ করেন। বেশ কয়েক বছর থেকে এটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। সড়ক নতুন হওয়ার পর এই পথ দিয়ে যান চলাচল বেড়ে যায়। দুই বছর আগে সেতুটি ভেঙে দেবে গেছে। এরপর থেকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পায়ে হেটে চলতে হচ্ছে। সাঁকো নষ্ট হয়ে গেলে সেটি আবার সংস্কার করা হয়।তাঁরা আরো বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এখানকার কয়েক হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় চা বাগানের ও বাজারের পণ্য পরিবহনেও সমস্যায় পড়তে হয়।
স্থানীয় বরমচাল ইউপি সদস্য চন্দন কুর্মী জানান, সড়কটি পাকা হওয়ায় বরমচালসহ আরো দুইটি ইউনিয়নের মানুষ সহজে সিলেটসহ জেলা শহরে যাওয়া আসা করতে পারতেন। বরমচালের বড়ছড়ার ওপর সেতু নতুন করে নির্মাণ না করায় জরাজীর্ণ সেতুটি ভেঙে গেছে। সেতু ভেঙে যাওয়ায় নতুন পাকা সড়কটিও তেমন কাজে আসছেনা। নতুন সেতুর টেন্ডার হয়েছে শুনেছি। সেতু হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কুলাউড়া কার্যালয়ের প্রকৌশলী মো. খোয়াজুর রহমান বলেন, সেতুর দরপত্রসহ সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে কয়েক মাস আগে। কাজটি পেয়েছে মেসার্স মুহিবুর রহমান নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। করোনার লকডাউন ও বৃষ্টির জন্য এতদিন কাজ শুরু করা যায়নি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সেতুর কাজ শুরু হবে। বলে জানান দৈনিক মাতৃভূমির খবর প্রতিনিধিকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।