ঢাকা ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ “২৬শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ” –মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা হতে ৫৩ কেজি গাঁজাসহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০; মাদক বহনে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ। “মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন” ইন্দুরকানীতে দিনব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ

কুলাউড়ার রুকসানা মৃত্যুর প্রধান আসামি, রাজন গ্রেফতার

মাতৃভূমির খবর, কুলাউড়া উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ রুবেল বক্স (পাবেল)

কুলাউড়া উপজেলার রুকসানা বেগম (১৮) মৃত্যুর ১২ দিন পর অভিযুক্ত স্বামী রাজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ জুন ) সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ১০ জুন সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার মুড়ারগাও (ধুপাগুল) গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে রুকসানার লাশ উদ্ধার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ বিষয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করা হয়।

জানা যায়, আত্মীয়তার সূত্রে রাজন মিয়া ও রুকসানা বেগম এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু পরিবার থেকে মেনে না নেওয়ায় গত বছরের ২৬ জুন দুজনে পালিয়ে বিয়ে করেন। একপর্যায়ে দুই পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী রাজন বিভিন্ন সময়ে ব্যবসার কথা বলে রুকসানাকে ২ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দেয়। যৌতুকের টাকা না পেয়ে প্রায় সময় রাজন সহ তার পরিবারের লোকজন রুকসানাকে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ১০ জুন দুপুরে রুকসানা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেওয়া হয় তার পরিবারকে।

রুকসানা বেগমের মা দাবি করেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক দাবি করে আসছিল। যৌতুকের জন্য প্রায় দিন আমার মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করত। অবশেষে যৌতুকের টাকা চেয়ে না পেয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়ে রুকসানা বেগম কে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। এই হত্যার ঘটনাকে আড়াল করতে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। ঘটনার দিন তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে প্রচন্ড মারধর করে। মেয়েকে হত্যার পর ঘাতক স্বামী রাজন মিয়া ফোন করে আমাদের কে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেয়। ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের লাশ দাফনের জন্য স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুব তাড়াহুড়ো করছে। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। প্রধান আসামি গ্রেফতার হওয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাজনের ফাঁসি দাবি করেন।

ঘটনার ৮ দিন পর ১৮জুন প্রথম গনমাধ্যমে রুকসানা হত্যার বিষয়টি সামনে আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। রুকসানার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বোন রিনা বেগমের একটি ভিডিও পোস্ট ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে নিহত রুকসানার মুখ ও কপালে কালো আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়।

হত্যার অভিযোগের বিষয়ে রুকসানার বেগমের স্বামী রাজন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে (গ্রেফতারের পূর্বে) তিনি জানান, ঘটনার দিন ১ টার পর বাড়িতে এসে খোঁজাখুঁজি করে আমার স্ত্রীকে পাচ্ছিলাম না। কিছু সময় পর হঠাৎ আমাদের পুরনো একটি গোয়াল ঘরে গিয়ে আমার স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। যৌতুকের দাবিতে আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করার বিষয়টি মিথ্যা।

সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মাইনুল জাকির বুধবার (২৩ জুন) মুঠোফোনে এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছিল।রোকসানার মায়ের করা সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজনকে গতকাল গ্রেফতার করেছি।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার।

কুলাউড়ার রুকসানা মৃত্যুর প্রধান আসামি, রাজন গ্রেফতার

আপডেট টাইম ০১:৪৯:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১

মাতৃভূমির খবর, কুলাউড়া উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ রুবেল বক্স (পাবেল)

কুলাউড়া উপজেলার রুকসানা বেগম (১৮) মৃত্যুর ১২ দিন পর অভিযুক্ত স্বামী রাজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ জুন ) সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ১০ জুন সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার মুড়ারগাও (ধুপাগুল) গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে রুকসানার লাশ উদ্ধার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ বিষয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করা হয়।

জানা যায়, আত্মীয়তার সূত্রে রাজন মিয়া ও রুকসানা বেগম এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু পরিবার থেকে মেনে না নেওয়ায় গত বছরের ২৬ জুন দুজনে পালিয়ে বিয়ে করেন। একপর্যায়ে দুই পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী রাজন বিভিন্ন সময়ে ব্যবসার কথা বলে রুকসানাকে ২ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দেয়। যৌতুকের টাকা না পেয়ে প্রায় সময় রাজন সহ তার পরিবারের লোকজন রুকসানাকে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ১০ জুন দুপুরে রুকসানা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেওয়া হয় তার পরিবারকে।

রুকসানা বেগমের মা দাবি করেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক দাবি করে আসছিল। যৌতুকের জন্য প্রায় দিন আমার মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করত। অবশেষে যৌতুকের টাকা চেয়ে না পেয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়ে রুকসানা বেগম কে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। এই হত্যার ঘটনাকে আড়াল করতে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। ঘটনার দিন তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে প্রচন্ড মারধর করে। মেয়েকে হত্যার পর ঘাতক স্বামী রাজন মিয়া ফোন করে আমাদের কে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেয়। ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের লাশ দাফনের জন্য স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুব তাড়াহুড়ো করছে। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। প্রধান আসামি গ্রেফতার হওয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাজনের ফাঁসি দাবি করেন।

ঘটনার ৮ দিন পর ১৮জুন প্রথম গনমাধ্যমে রুকসানা হত্যার বিষয়টি সামনে আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। রুকসানার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বোন রিনা বেগমের একটি ভিডিও পোস্ট ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে নিহত রুকসানার মুখ ও কপালে কালো আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়।

হত্যার অভিযোগের বিষয়ে রুকসানার বেগমের স্বামী রাজন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে (গ্রেফতারের পূর্বে) তিনি জানান, ঘটনার দিন ১ টার পর বাড়িতে এসে খোঁজাখুঁজি করে আমার স্ত্রীকে পাচ্ছিলাম না। কিছু সময় পর হঠাৎ আমাদের পুরনো একটি গোয়াল ঘরে গিয়ে আমার স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। যৌতুকের দাবিতে আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করার বিষয়টি মিথ্যা।

সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মাইনুল জাকির বুধবার (২৩ জুন) মুঠোফোনে এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছিল।রোকসানার মায়ের করা সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজনকে গতকাল গ্রেফতার করেছি।