ঢাকা ১১:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ “২৬শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ” –মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা হতে ৫৩ কেজি গাঁজাসহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০; মাদক বহনে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ। “মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন” ইন্দুরকানীতে দিনব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ

কুমিল্লায় আলোচিত কলেজ শিক্ষক সুজন হত্যা মামলায় ০৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার:
পূর্ব আক্রোশের জেরধরে পরিকল্পিতভাবে কুমিল্লা বারপাড়ায় আলোচিত কলেজ শিক্ষক সাইফুল আজম সুজনকে হত্যার দায়ে ০৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। মঙ্গলবার (২ মে) বেলা সোয়া ১১টায় এ রায় দেন কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০১০ সালে ৮ অক্টোবর বেলা ২:৩০ ঘটিকার সময় কুমিল্লা নগরীর বারপাড়ার নিবাসী এ.কে.এম ফারুক আজম এর বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর তাঁকে দেখিয়া আসামিরা এলোপাথাড়িভাবে মারধর করিয়া শারীরে নীলা ফুলা জখম করে এবং তাঁর শোরচিৎকারে ছেলে সুজন, সোহাগ, টিপু এবং স্ত্রী নার্গিস আগাইয়া আসিলে স্ত্রী নার্গিস বেগম ও ছেলে সাইফুল আজম সুজনকে হত্যার উদ্দেশে মাথায় কোপ মেরে রক্তাক্ত জখম করে এবং ঘরের দরজা জানালা ভাংচুর করে প্রায় ১৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে একইদিন বিকেল ৪টায় তাঁর ছেলে সাইফুল আজম সুজনকে বারপাড়া মডেল স্কুল এন্ড কলেজে একা পাইয়া তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুনরায় ধারালো অস্ত্রধারা কোপ মারিয়া মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করিলে তাঁকে উদ্ধার করে কুমেক হসপিটালে নিয়ে গেলে তাঁর অবস্থা আশংকাজনক দেখিয়া কুমেক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিলেক হসপিটালে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে সুজন ঢামেক হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা কুচাইতলীর নিবাসী মৃত আবদুল আমিদ এর ছেলে মোঃ এ.কে.এম ফারুক আজম বাদী হয়ে মোঃ সহিদুর রহমান খোকনসহ ১১জনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় দঃ বিঃ ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩০৭/৩২৬/৩৭৯/৩৪ ধারার বিধানমতে মামলা দায়ের করিলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ নাসির উদ্দিন মৃধা এজাহারে বর্ণিত ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তপূর্বক ২০১১ সালের ২২ মে আসামি সহিদুর রহমান খোকনসহ ০৯জনের বিরুদ্ধে দঃ বিঃ ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৪২৭/৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন (যাহার চার্জশিট নং- ৩৬৩) এবং ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে আসিলে রাষ্ট্রপক্ষে মানীত ২১জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে পলাতক আসামি মোঃ নয়ন, কামাল ও মিঠুন এবং আসামি জামাল, মোঃ ইলিয়াস ও জাকির হোসেন এর বিরুদ্ধে দঃ বিঃ ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যককে মাহামান্য হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদানসহ মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করেন আদালত। উল্লেখ যে, আসামি মোঃ সহিদুর রহমান প্রকাশ খোকন মৃত্যু বরণ করায় তার প্রতি কোন আদেশ প্রদান করেননি এবং আসামি রেশমা বেগম ও লাকী আক্তার এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই নারী আসামি রেশমা ও লাকী আক্তারকে অভিযোগের দায় হতে খালাস প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি নগরীর কুচাইতলী মৃত সহিদুর রহমান খোকনের ছেলে মো: নয়ন (২০), মোঃ কামাল (৩০), মিঠুন (২৪) ও জামাল (২২) এবং নগরীর বারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ ইলিয়াস ও নগরীর কুচাইতলী এলাকার বাসিন্দা আঃ হামিদ এর ছেলে জাকির হোসেন (৩২)।
রায় ঘোঘণাকালে জামাল, মোঃ ইলিয়াছ ও জাকির হোসেন ডকে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এপিপি এড. মোঃ জাকির হোসেন বলেন- এরফলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ রায় অচিরেই বাস্তবায়ন দেখতে চায় এজাহারকারী ও মৃতার পরিবারবর্গ।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী এডভোকেট মোঃ মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন- এ রায়ে আসামিপক্ষ অসন্তুষ্ট। রায়ের কপি হাতে পেলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপীল করবে।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার।

কুমিল্লায় আলোচিত কলেজ শিক্ষক সুজন হত্যা মামলায় ০৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

আপডেট টাইম ০৩:৩৯:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার:
পূর্ব আক্রোশের জেরধরে পরিকল্পিতভাবে কুমিল্লা বারপাড়ায় আলোচিত কলেজ শিক্ষক সাইফুল আজম সুজনকে হত্যার দায়ে ০৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। মঙ্গলবার (২ মে) বেলা সোয়া ১১টায় এ রায় দেন কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০১০ সালে ৮ অক্টোবর বেলা ২:৩০ ঘটিকার সময় কুমিল্লা নগরীর বারপাড়ার নিবাসী এ.কে.এম ফারুক আজম এর বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর তাঁকে দেখিয়া আসামিরা এলোপাথাড়িভাবে মারধর করিয়া শারীরে নীলা ফুলা জখম করে এবং তাঁর শোরচিৎকারে ছেলে সুজন, সোহাগ, টিপু এবং স্ত্রী নার্গিস আগাইয়া আসিলে স্ত্রী নার্গিস বেগম ও ছেলে সাইফুল আজম সুজনকে হত্যার উদ্দেশে মাথায় কোপ মেরে রক্তাক্ত জখম করে এবং ঘরের দরজা জানালা ভাংচুর করে প্রায় ১৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে একইদিন বিকেল ৪টায় তাঁর ছেলে সাইফুল আজম সুজনকে বারপাড়া মডেল স্কুল এন্ড কলেজে একা পাইয়া তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুনরায় ধারালো অস্ত্রধারা কোপ মারিয়া মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করিলে তাঁকে উদ্ধার করে কুমেক হসপিটালে নিয়ে গেলে তাঁর অবস্থা আশংকাজনক দেখিয়া কুমেক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিলেক হসপিটালে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে সুজন ঢামেক হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা কুচাইতলীর নিবাসী মৃত আবদুল আমিদ এর ছেলে মোঃ এ.কে.এম ফারুক আজম বাদী হয়ে মোঃ সহিদুর রহমান খোকনসহ ১১জনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় দঃ বিঃ ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩০৭/৩২৬/৩৭৯/৩৪ ধারার বিধানমতে মামলা দায়ের করিলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ নাসির উদ্দিন মৃধা এজাহারে বর্ণিত ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তপূর্বক ২০১১ সালের ২২ মে আসামি সহিদুর রহমান খোকনসহ ০৯জনের বিরুদ্ধে দঃ বিঃ ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৪২৭/৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন (যাহার চার্জশিট নং- ৩৬৩) এবং ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে আসিলে রাষ্ট্রপক্ষে মানীত ২১জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে পলাতক আসামি মোঃ নয়ন, কামাল ও মিঠুন এবং আসামি জামাল, মোঃ ইলিয়াস ও জাকির হোসেন এর বিরুদ্ধে দঃ বিঃ ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যককে মাহামান্য হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদানসহ মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করেন আদালত। উল্লেখ যে, আসামি মোঃ সহিদুর রহমান প্রকাশ খোকন মৃত্যু বরণ করায় তার প্রতি কোন আদেশ প্রদান করেননি এবং আসামি রেশমা বেগম ও লাকী আক্তার এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই নারী আসামি রেশমা ও লাকী আক্তারকে অভিযোগের দায় হতে খালাস প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি নগরীর কুচাইতলী মৃত সহিদুর রহমান খোকনের ছেলে মো: নয়ন (২০), মোঃ কামাল (৩০), মিঠুন (২৪) ও জামাল (২২) এবং নগরীর বারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ ইলিয়াস ও নগরীর কুচাইতলী এলাকার বাসিন্দা আঃ হামিদ এর ছেলে জাকির হোসেন (৩২)।
রায় ঘোঘণাকালে জামাল, মোঃ ইলিয়াছ ও জাকির হোসেন ডকে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এপিপি এড. মোঃ জাকির হোসেন বলেন- এরফলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ রায় অচিরেই বাস্তবায়ন দেখতে চায় এজাহারকারী ও মৃতার পরিবারবর্গ।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী এডভোকেট মোঃ মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন- এ রায়ে আসামিপক্ষ অসন্তুষ্ট। রায়ের কপি হাতে পেলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপীল করবে।