ওবায়দুল কবির সম্রাটঃকয়রা:-
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশে পঞ্চম দফায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। একইসঙ্গে অতি জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে খুব খারাপ সময় পার করছেন কয়রার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদের অবস্থা এখন সংকটময়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুশ্চিন্তার শেষ নেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
বুধবার (০৬ মে) কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে এমনটা জানা গেছে।
কয়রা সদরের এশিয়া টেইলার্স মালিক মো. আহাদ বলেন, একটুও ভালো নেই। খুব খারাপ সময় পার করছি। গত এক দুই দিন ধরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বল্প পরিসরে দোকান খোলা রাখছি। কিছু কাপড় বানানোর অর্ডারের আশায়।তার পরেও জরিমানার ভয় তো আছেই। সাধারণ ছুটির একমাস কীভাবে চলেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমানো যা টাকা ছিল, তা দিয়ে চলেছি। টাকাও শেষ। ঘর ভাড়া দিতে হবে। দোকান ভাড়া দিতে হবে। বাজার করতে হবে। একেবারে দেয়ালে পিঠে ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা। না পারতে ছুটি শেষ হওয়ার আগেই দোকান খুলেছি। বাঁচতে তো হবে। কিছু করে খেতে তো হবে। আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এই ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠব?
বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের পরিচালক মো. মোহাসিন বলেন, ইফতারির কোনো বেচা-কেনা নেই। এ বছর ইফতারী তৈরী করি নাই। গত বছর এই সময় ইফতারি বিক্রি করে দম ফেলার সময় পাইনি। আর এখন রাস্তায় মানুষজন নেই। করোনার কারণে কী হয়ে গেলো?ভাবা যায়!
বেচা-কেনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল যা বিক্রি করেছি, এই টাকা দিয়ে আমার কর্মচারীদের বেতনই হয়নি। লকডাউনে মাছি মারা ছাড়া আমাদের আর কোনো কাজ নেই! এমন একটা অবস্থা। কোনো ক্রেতা নেই। সামনে ঈদ, কর্মচারীদের কীভাবে বেতন-বোনাস দেব, তাই এখন মাথায় ঢুকছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বস্তালয়ের মালিক বলেন, ২৫ দিন পরে আজকে দোকান খুললাম। এর আগে মাঝে মাঝে দোকান খুলতাম। প্রশাসনের লোকজন দেখলে সঙ্গে সঙ্গে দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে যেতাম। সাধারণ ছুটির মধ্যে দোকান বন্ধ রেখে কীভাবে চলেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্ট আমাদের কাছেই থাক। কাউকে বলতে চাই না। বলেও বা কী হবে? আমাদের ক্ষতি তো আর কেউ পুষিয়ে দিতে পারবে না।