মোঃ আব্দুস সালাম,বিশেষ প্রতিনিধি,কমলগঞ্জ মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে চায়ের পাশাপাশি খ্যাতি রয়েছে সারা দেশজুড়ে আনারসের। করোনা মহামারী ও মাহে রমজানের কারণে চাহিদা বেশি থাকায় গত বছরের তুলনায় এবারও শ্রীমঙ্গলে আনারসের দাম কিছুটা বেশি রয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে প্রতিদিন শ্রীমঙ্গলের পাইকারি বাজারের আড়তে নিয়ে আসা হয় আনারসগুলো। এই আনারসগুলো পাইকারির পাশাপাশি খোলা বাজারে বিপুল পরিমাণ কেনাবেচা হয়ে থাকে। এছাড়াও শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারসগুলো প্রতিদিনই, ট্রাক, পিকআপ আর ভ্যান ভর্তি করে বিভিন্ন জেলায় ও উপজেলায় নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলায় ষাটের দশক থেকেই এই আনারস চাষ শুরু হয়। এখানকার উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু আনারস চাষের জন্য বেশ উপযোগী। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারা বছরই কমবেশি আনারস পৌঁছে যায়। এবার উপজেলার বিভিন্ন বাগানে চাষ করা আনারসের আগাম ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলনের কারণে গতবারের তুলনায় এবার আগাম আনারসের দাম কিছুটা বেশি রয়েছে।
উপজেলার কালাপুর মাইজদি এলাকার আনারসবাগানের মালিক রশিদ মিয়া বলেন, এবার আগাম ফলন ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে আনারস উত্তোলন করে বিক্রি করেছেন। সার ও চারার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি সব মিলিয়ে আনারসের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপরও যা দাম পাচ্ছেন, তাতে লাভই হয়েছে।
শ্রীমঙ্গলের উমর আলী নামে কাচামালের পাইকারি আড়তের স্বত্বাধিকারী বিল্লাল মিয়া বলেন, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজারে আগাম আনারস আসছে। চাষীদের কাছ থেকে কিনে তা তিনি বড় বড় পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। গতবারের চেয়ে এবার রমজানের কারণে দাম কিছুটা বেশি। প্রতিটি আনারস সর্বনিন্ম ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০/৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত বছর আনারসের দাম ছিল আকারভেদে ৮ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোহাজেরাবাদ, বিষামণি, হোসেনাবাদ, বালিশিরা, ডলুছড়া, সাতগাঁও, নন্দরানী, মাইজদীসহ উপজেলার পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৪১২ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় সেখানে সব মিলিয়ে লাভের মুখ দেখছেন স্থানীয় চাষিরা।
আনারসের আগাম ফলনের বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমীন মোনালিসা বলেন, শ্রীমঙ্গলে এবার প্রায় ৪১২ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আনারসের আগাম উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ কৃষি কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে।