ঢাকা ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন “বাংলাদেশের হিট অফিসার কী করছেন? হিট নিয়ন্ত্রণে “ অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের নগদ অর্থ সহায়তায়: আ জ ম নাসির “স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা ঢাকা মতিঝিলে ইসতেস্কার নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার।

ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়ায় ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঈদজামাত হচ্ছে না

মামুনুর রশিদ, কিশোরগঞ্জ:ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৩ তম উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামায়াতটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না । করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ও মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় ঈদের জামাত আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সে প্রেক্ষিতে শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের জামাত আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহত্তম জামাতে হিসাব অনুযায়ী, এবার শোলাকিয়া ঈদগাহে ১৯৩তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কমিটির সভাপতি মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, করোনা ছড়িয়ে পড়া রোধে সারাদেশে খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে ঈদগাহ কমিটির সভা করাও সম্ভব হচ্ছে না।তবে জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কমিটির সভাপতি হিসেবে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠরে ইতিহাস
কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তের বিস্তীর্ণ এলাকার নাম শোলাকিয়া। শোলাকিয়া মাঠ এলাকার পূর্ব নাম ছিল ইচ্ছাগঞ্জ। শোলাকিয়া সাহেব বাড়ির পূর্ব পুরুষ শাহ সুফি মরহুম সৈয়দ আহম্মেদ ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দের শুরুতে এই স্থানে সর্বপ্রথম একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে শোলাকিয়া মাঠের গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তীতে হয়বতনগরের শেষ জমিদার দেওয়ান মোহাম্মদ মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের নামে ২ একর ৩৫ শতক জমি দান করেন। দলিল অনুযায়ী ওই সময়ের ২শ বছর আগে থেকেই এ ঈদগাহে দু’টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। সৈয়দ আহাম্মদ সাহেবের পর উত্তরাধিকারসূত্রে হয়বতনগর জমিদার বাড়ির তৎকালীন জমিদার সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ ১৮২৯ সাল থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্তু শোলাকিয়া মাঠের ইমাম ছাড়াও ঈদগাহের সর্বপ্রথম মোতাওয়াল্লি ছিলেন। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে হয়বতনগর জমিদার পরিবার থেকে মোতাওয়াল্লি ও তাদের সিদ্ধান্ত মতে ইমাম নিযুক্ত করা হতো। বর্তমান জেলা প্রশাসক মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের আয়তন
বর্তমানে খাস জমি নিয়ে প্রায় ৭ একর জমি রয়েছে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে। ঈদগাহের চারপাশে প্রাচীর ঘেরা মাঠে মোট ২৬৫টি কাতার রয়েছে। প্রতিটি কাতারে প্রায় ৪শ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন। সে হিসাবে মাঠের ভেতরে প্রায় সোয়া লাখ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে মাঠের আশপাশের রাস্তা ও বাড়িঘরসহ প্রায় দুই লক্ষাধিক মুসল্লির বেশি নামাজ আদায় করে থাকেন।
শোলাকিয়া নামকরণের ইতিহাস
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক ঈদগাহের সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে।একটি জনশ্রুতিতে জানা গেছে, বহুকাল আগে একবার এ মাঠে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় সোয়া লাখ। এই সোয়া লাখ থেকেই উচ্চারণ বিবর্তনে বর্তমান শোলাকিয়ার নামকরণ হয়েছে।
অন্য জনশ্রুতিতে জানা গেছে, আজকের মৃতপ্রায় নরসুন্দা নদীটি এককালে ছিল সুগভীর আর বেগবতী। নদীটিতে নিয়মিত বড় বড় নৌযান চলাচল করতো এবং মোঘল শাসনামলে বন্দরটি এই অঞ্চলের বিখ্যাত নৌবন্দর হিসেবে খ্যাত ছিল। একবার বন্দরটিতে সন্নাসীদের ১৬টি লবণ বোঝাই নৌযান এসে নোঙ্গর করেছিল। এর ফলে উক্ত লবণ বোঝাই নৌযান থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে শুল্ক আদায় করেছিল, সে থেকে উক্ত এলাকাটি উচ্চারণ বিবর্তনে ক্রমান্বয়ে শুল্ক থেকে শোলাকিয়া নাম প্রচলিত হয়েছিল।
তৃতীয় জনশ্রুতিতে রয়েছে, ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানির আমলে সেখানে নরসুন্দা নদীবন্দর ছিল, তার পাশেই ছিল ফরাসি বণিকের লবণ ও শুকনা মাছের আড়ত। সে আড়তের জন্য বাইরে থেকে যে লবণ আমদানি ও শুকনা মাছ রপ্তানি করা হতো, তার জন্য কোম্পানিকে বিশেষ শুল্ক দিতে হতো। এর ফলে এ শুল্ক আদায়ে ঘাট থেকে এলাকাটি উচ্চারণ বিকৃতি করে ক্রমান্বয়ে শোলাকিয়া নামে পরিচিত হয়ে উঠে।
চতুর্থ জনশ্রুতি রয়েছে, মোঘল আমলে স্থানীয় এলাকাটিতে পরগনার রাজস্ব আদায়ের একটি অফিস ছিল। সে অফিসের অধীনে পরগনার রাজস্ব ছিল সোয়া লাখ টাকা। সোয়া লাখ টাকার রাজস্ব আদায়ের অফিসের উচচারণ বিবর্তনে এলাকাটির নাম রয়েছে শোলাকিয়া।
জানা গেছে, বৃটিশ, পাকিস্তুান ও বর্তমান বাংলাদেশ আমলের গোড়ার দিকেও এ দেশের প্রত্যন্ত জেলাসমূহ ছাড়াও সুদুর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য আসাম, পাকিস্তান, ভূটান, ইরান, নেপাল, সৌদিআরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানগণ শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের জামাতে শরিক হতেন। সে সময়ে এ ঈদগাহে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে ভৈরব-টু-কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ-টু-কিশোরগঞ্জ রেলপথে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু ছিল। হয়বতনগর হাবিলীতে ঈদের জামাত হিসেবে অতিথিদের জন্য মুসাফির খানা নামে একটি বড় আকারের ঘরও ছিল। ঈদের নামাজের ২/৩ তিন আগে থেকেই দলে দলে মুসল্লিরা এসে হয়বতনগর হাবিলিসহ ঈদগাহ ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থান নিত। এখন অবশ্য তেমন দেখা যায় না। তবে শহরের বর্তমান হারুয়া এলাকায় ছোট আকারের বেশ কয়েকটি মুসাফির খানা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। কিন্ত বর্তমানে বিশ্বে করোনাভাইরাসরে প্রার্দুভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতর কারণে এবারেই প্রথম বৃহত্তম ঈদ জামায়াতটি হবে না।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন

ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়ায় ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঈদজামাত হচ্ছে না

আপডেট টাইম ০৮:২০:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ মে ২০২০
মামুনুর রশিদ, কিশোরগঞ্জ:ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৩ তম উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামায়াতটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না । করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ও মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় ঈদের জামাত আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সে প্রেক্ষিতে শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের জামাত আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহত্তম জামাতে হিসাব অনুযায়ী, এবার শোলাকিয়া ঈদগাহে ১৯৩তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কমিটির সভাপতি মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, করোনা ছড়িয়ে পড়া রোধে সারাদেশে খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে ঈদগাহ কমিটির সভা করাও সম্ভব হচ্ছে না।তবে জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কমিটির সভাপতি হিসেবে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠরে ইতিহাস
কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তের বিস্তীর্ণ এলাকার নাম শোলাকিয়া। শোলাকিয়া মাঠ এলাকার পূর্ব নাম ছিল ইচ্ছাগঞ্জ। শোলাকিয়া সাহেব বাড়ির পূর্ব পুরুষ শাহ সুফি মরহুম সৈয়দ আহম্মেদ ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দের শুরুতে এই স্থানে সর্বপ্রথম একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে শোলাকিয়া মাঠের গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তীতে হয়বতনগরের শেষ জমিদার দেওয়ান মোহাম্মদ মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের নামে ২ একর ৩৫ শতক জমি দান করেন। দলিল অনুযায়ী ওই সময়ের ২শ বছর আগে থেকেই এ ঈদগাহে দু’টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। সৈয়দ আহাম্মদ সাহেবের পর উত্তরাধিকারসূত্রে হয়বতনগর জমিদার বাড়ির তৎকালীন জমিদার সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ ১৮২৯ সাল থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্তু শোলাকিয়া মাঠের ইমাম ছাড়াও ঈদগাহের সর্বপ্রথম মোতাওয়াল্লি ছিলেন। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে হয়বতনগর জমিদার পরিবার থেকে মোতাওয়াল্লি ও তাদের সিদ্ধান্ত মতে ইমাম নিযুক্ত করা হতো। বর্তমান জেলা প্রশাসক মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের আয়তন
বর্তমানে খাস জমি নিয়ে প্রায় ৭ একর জমি রয়েছে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে। ঈদগাহের চারপাশে প্রাচীর ঘেরা মাঠে মোট ২৬৫টি কাতার রয়েছে। প্রতিটি কাতারে প্রায় ৪শ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন। সে হিসাবে মাঠের ভেতরে প্রায় সোয়া লাখ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে মাঠের আশপাশের রাস্তা ও বাড়িঘরসহ প্রায় দুই লক্ষাধিক মুসল্লির বেশি নামাজ আদায় করে থাকেন।
শোলাকিয়া নামকরণের ইতিহাস
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক ঈদগাহের সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে।একটি জনশ্রুতিতে জানা গেছে, বহুকাল আগে একবার এ মাঠে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় সোয়া লাখ। এই সোয়া লাখ থেকেই উচ্চারণ বিবর্তনে বর্তমান শোলাকিয়ার নামকরণ হয়েছে।
অন্য জনশ্রুতিতে জানা গেছে, আজকের মৃতপ্রায় নরসুন্দা নদীটি এককালে ছিল সুগভীর আর বেগবতী। নদীটিতে নিয়মিত বড় বড় নৌযান চলাচল করতো এবং মোঘল শাসনামলে বন্দরটি এই অঞ্চলের বিখ্যাত নৌবন্দর হিসেবে খ্যাত ছিল। একবার বন্দরটিতে সন্নাসীদের ১৬টি লবণ বোঝাই নৌযান এসে নোঙ্গর করেছিল। এর ফলে উক্ত লবণ বোঝাই নৌযান থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে শুল্ক আদায় করেছিল, সে থেকে উক্ত এলাকাটি উচ্চারণ বিবর্তনে ক্রমান্বয়ে শুল্ক থেকে শোলাকিয়া নাম প্রচলিত হয়েছিল।
তৃতীয় জনশ্রুতিতে রয়েছে, ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানির আমলে সেখানে নরসুন্দা নদীবন্দর ছিল, তার পাশেই ছিল ফরাসি বণিকের লবণ ও শুকনা মাছের আড়ত। সে আড়তের জন্য বাইরে থেকে যে লবণ আমদানি ও শুকনা মাছ রপ্তানি করা হতো, তার জন্য কোম্পানিকে বিশেষ শুল্ক দিতে হতো। এর ফলে এ শুল্ক আদায়ে ঘাট থেকে এলাকাটি উচ্চারণ বিকৃতি করে ক্রমান্বয়ে শোলাকিয়া নামে পরিচিত হয়ে উঠে।
চতুর্থ জনশ্রুতি রয়েছে, মোঘল আমলে স্থানীয় এলাকাটিতে পরগনার রাজস্ব আদায়ের একটি অফিস ছিল। সে অফিসের অধীনে পরগনার রাজস্ব ছিল সোয়া লাখ টাকা। সোয়া লাখ টাকার রাজস্ব আদায়ের অফিসের উচচারণ বিবর্তনে এলাকাটির নাম রয়েছে শোলাকিয়া।
জানা গেছে, বৃটিশ, পাকিস্তুান ও বর্তমান বাংলাদেশ আমলের গোড়ার দিকেও এ দেশের প্রত্যন্ত জেলাসমূহ ছাড়াও সুদুর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য আসাম, পাকিস্তান, ভূটান, ইরান, নেপাল, সৌদিআরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানগণ শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের জামাতে শরিক হতেন। সে সময়ে এ ঈদগাহে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে ভৈরব-টু-কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ-টু-কিশোরগঞ্জ রেলপথে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু ছিল। হয়বতনগর হাবিলীতে ঈদের জামাত হিসেবে অতিথিদের জন্য মুসাফির খানা নামে একটি বড় আকারের ঘরও ছিল। ঈদের নামাজের ২/৩ তিন আগে থেকেই দলে দলে মুসল্লিরা এসে হয়বতনগর হাবিলিসহ ঈদগাহ ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থান নিত। এখন অবশ্য তেমন দেখা যায় না। তবে শহরের বর্তমান হারুয়া এলাকায় ছোট আকারের বেশ কয়েকটি মুসাফির খানা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। কিন্ত বর্তমানে বিশ্বে করোনাভাইরাসরে প্রার্দুভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতর কারণে এবারেই প্রথম বৃহত্তম ঈদ জামায়াতটি হবে না।