ঢাকা ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন বগুড়ায় চাঞ্চ্যল্যকর শিশু বন্ধনকে গলাকেটে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন গজারিয়ায় দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এর পক্ষে গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান –অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

অনুপ কুমার রায় রাজশাহী

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ (১ আগস্ট)। ১৯২১ সালের আজকের এই দিনে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নূরপুর মালঞ্চি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাত্র পাঁচ মাস বয়সে তাঁর বাবা হায়াত উল্লাহ সরকারের মৃত্যুর পর তিনি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়া শেষে মা মইফুন নেসার সাথে নানার বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামে চলে যান । এ দিনটি উপলক্ষে আজ রোববার বিকালে বাউসা গ্রামে পলান সরকার পাঠাগারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে পাঠক সমাবেশ ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।

পলান সরকারের বাবা-মা তাঁর নাম রেখেছিলেন হারেজ উদ্দিন সরকার। তবে জন্মের পর থেকেই মা “পলান” নামে ডাকতেন। পরে পলান সরকার নামেই পরিচিতি পান। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে পলান সরকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি টানেন। কর্মজীবনের শুরুতে পলান সরকার নানা ময়েন উদ্দিন সরকারের জমিদারির খাজনা আদায় করতেন এবং জমিদারি ব্যবস্থা বিলুপ্ত হলে ১৯৬২ সালে বাউসা ইউনিয়নে কর আদায়কারীর চাকরি পান। একসময় তিনি যাত্রাদলে ভাঁড়ের চরিত্রে অভিনয় করতেন এবং যাত্রার পাণ্ডলিপি হাতে লিখে কপি করতেন। অন্যদিকে মঞ্চের পেছন থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপ বলে দিতেন। এভাবেই তাঁর বই পড়ার নেশা জাগ্রত হয়।

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের অশিক্ষার অন্ধকারের উজ্জ্বল প্রদীপ হয়ে উঠা বইপ্রেমী পলান সরকার নিজের টাকায় বই কিনে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। এ জন্য ২০১১ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মান হিসেবে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে সরকারিভাবে তাঁর বাড়ির আঙিনায় একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করে। এছাড়াও ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে’ উপলক্ষে সারা বিশ্বের ৪০টি বিভিন্ন ভাষার দৈনিকে তাঁর উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার জীবনের ছায়া অবলম্বনে বিটিভির জন্য গোলাম সারোয়ার দোদুল নির্মাণ করেন ঈদের নাটক ‘অবদান’। বিনাম‚ল্যে বই বিতরণ করে সকলের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির করার জন্য ইউনিলিভার বাংলাদেশ পলান সরকারকে ‘সাদা মনের মানুষ’ খেতাবে ভূষিত করে।

অবশেষে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের বাড়িতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ২০১৯ সালে ১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান আলোকিত মানুষ পলান সরকার।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

আপডেট টাইম ০৩:৩০:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ

অনুপ কুমার রায় রাজশাহী

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোর ফেরিওয়ালা পলান সরকারের ১০১ তম জন্মদিন আজ (১ আগস্ট)। ১৯২১ সালের আজকের এই দিনে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নূরপুর মালঞ্চি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাত্র পাঁচ মাস বয়সে তাঁর বাবা হায়াত উল্লাহ সরকারের মৃত্যুর পর তিনি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়া শেষে মা মইফুন নেসার সাথে নানার বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামে চলে যান । এ দিনটি উপলক্ষে আজ রোববার বিকালে বাউসা গ্রামে পলান সরকার পাঠাগারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে পাঠক সমাবেশ ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।

পলান সরকারের বাবা-মা তাঁর নাম রেখেছিলেন হারেজ উদ্দিন সরকার। তবে জন্মের পর থেকেই মা “পলান” নামে ডাকতেন। পরে পলান সরকার নামেই পরিচিতি পান। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে পলান সরকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি টানেন। কর্মজীবনের শুরুতে পলান সরকার নানা ময়েন উদ্দিন সরকারের জমিদারির খাজনা আদায় করতেন এবং জমিদারি ব্যবস্থা বিলুপ্ত হলে ১৯৬২ সালে বাউসা ইউনিয়নে কর আদায়কারীর চাকরি পান। একসময় তিনি যাত্রাদলে ভাঁড়ের চরিত্রে অভিনয় করতেন এবং যাত্রার পাণ্ডলিপি হাতে লিখে কপি করতেন। অন্যদিকে মঞ্চের পেছন থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপ বলে দিতেন। এভাবেই তাঁর বই পড়ার নেশা জাগ্রত হয়।

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের অশিক্ষার অন্ধকারের উজ্জ্বল প্রদীপ হয়ে উঠা বইপ্রেমী পলান সরকার নিজের টাকায় বই কিনে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। এ জন্য ২০১১ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মান হিসেবে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে সরকারিভাবে তাঁর বাড়ির আঙিনায় একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করে। এছাড়াও ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে’ উপলক্ষে সারা বিশ্বের ৪০টি বিভিন্ন ভাষার দৈনিকে তাঁর উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার জীবনের ছায়া অবলম্বনে বিটিভির জন্য গোলাম সারোয়ার দোদুল নির্মাণ করেন ঈদের নাটক ‘অবদান’। বিনাম‚ল্যে বই বিতরণ করে সকলের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির করার জন্য ইউনিলিভার বাংলাদেশ পলান সরকারকে ‘সাদা মনের মানুষ’ খেতাবে ভূষিত করে।

অবশেষে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের বাড়িতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ২০১৯ সালে ১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান আলোকিত মানুষ পলান সরকার।