ঢাকা ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
“মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন” ইন্দুরকানীতে দিনব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ করে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন … লালমনিরহাটে বৃষ্টির জন‍্য বিশেষ নামাজ আদায় মিছিল ও শোডাউন করায় মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মানিক দর্জিকে শোকজ –গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা এলাকায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি শ্রী রুপেন দাশ’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব । চন্দনাইশে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু ইষ্টার্ণ হাউজিংয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ায় সাংবাদিকদের উপর হামলা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কোরআন শরিফ অবমাননা করায় মানববন্ধন রাঙ্গুনিয়ায় সড়ক দূর্ঘটনার চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু

আম উৎপাদনে সব রেকর্ড ছাড়াতে পারে বলে আশা রাজশাহী কৃষি বিভাগের

বিশেষ প্রতিনিধি রাজশাহী :- এবার রাজশাহী জেলায় প্রায় ৫৮২ হেক্টর জমিতে বেড়েছে আমের চাষ। আর গতবারের চেয়ে এবার আমের মুকুল বেশি এসেছে। তাই ফলনও ভালো পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বাগান মালিকরা। ফলে এবার রাজশাহীতে আম উৎপাদনে সব রেকর্ড ছাড়াতে পারে বলে আশা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে মতে, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজশাহীতে মোট আমের আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছে ১১ দশমিক ৯৬ মেট্রিক টন। সম্ভাব্য মোট উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪০ দশমিক ৫৩ মেট্রিক টন আম, যার বিক্রয় মূল্য ছিল প্রায় ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৬২ হাজার ১২০ টাকা।
আর গত ২০২০-২১ মৌসুমে মোট আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছে ১২ দশমিক ১০১ মেট্রিক টন। সম্ভাব্য মোট উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ১২৮ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন আম। রাজশাহী জেলাজুড়ে আম বিক্রি হয়েছে প্রায় ৮৬ কোটি ৮৫ লাখ ১২ হাজার টাকার।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল আলীম বলেন, চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ধরা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন। গতবারের চেয়ে জেলায় এবার ৫৮২ হেক্টর জমিতে আম চাষ বেশি হওয়ায় উৎপাদন অন্য যে কোনো সময়ের রেকর্ড ভাঙবে বলে মনে করছেন এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।
আব্দুল আলীম বলেন, চলতি মৌসুমে আমের জন্য আবহাওয়া বেশ অনুকূলে রয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় মাটি পর্যাপ্ত পানি পেয়েছে। আবার অনেক কৃষক সবজি চাষের পাশাপাশি জমিতে আম গাছ লাগিয়েছেন। এতে গাছ পর্যাপ্ত পুষ্টি পেয়েছে। এসব কারণে এবার মুকুলও বেশি দেখা যাচ্ছে।
চারঘাটের আম চাষি আব্দুল মজিদ বলেন, এবার গাছে বিপুল পরিমাণ মুকুল এসেছে। গুটিও ভালো আসছে। তাই ফলন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়াটা একটু ভালো থাকলেই হয়।
তিনি আরও বলেন, গাছে মুকুল থাকাকালে কয়েকবার বৃষ্টির প্রয়োজন। বৃষ্টি হলেই চিন্তা নাই। আর বৃষ্টি না হলে ওষুধ মেশানো পানি গাছের মুকুলে স্প্রে করতে হবে যাতে মুকুল ঝরে না পড়ে।
রাজশাহীর কাটাখালীর হাজরা পুকুর এলাকার বাসিন্দা কোয়েল মল্লিক বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে আম গাছে পরিচর্যা কম করতে হয়। আবার খরচও কম। এ কারণে আমার দুই বিঘা জমিতে গতবার আম গাছ লাগিয়েছি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ হিল কাফী বলেন, এবার সন্ধ্যা নামতে নামতেই থাকছে হাল্কা শীত। আবার সকালেও বেশ ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে। রাতে কিছু কুয়াশা পড়ছে। আবার গেলো বর্ষা মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাত আম চাষিদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ ভূমিকা রাখছে। সবমিলিয়ে এবার আমের জন্য সম্ভাবনাময় সময় বলে মনে হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ হিল কাফী বলেন, গতবারও আমের ফলন খুব ভালো ছিল। কিন্তু সেই তুলনায় চাষিরা দাম পাননি। কারণ করোনা ও লকডাউন ছিল। এবার এমন কিছুই নেই। উপরন্তু এবার সামনে ঈদ। ঈদ শেষেই পাওয়া যাবে গাছপাকা আম। আর তাই সবদিক থেকেই এবার আম চাষিরা লাভবান হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

“মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন”

আম উৎপাদনে সব রেকর্ড ছাড়াতে পারে বলে আশা রাজশাহী কৃষি বিভাগের

আপডেট টাইম ১০:০৩:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ মার্চ ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি রাজশাহী :- এবার রাজশাহী জেলায় প্রায় ৫৮২ হেক্টর জমিতে বেড়েছে আমের চাষ। আর গতবারের চেয়ে এবার আমের মুকুল বেশি এসেছে। তাই ফলনও ভালো পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বাগান মালিকরা। ফলে এবার রাজশাহীতে আম উৎপাদনে সব রেকর্ড ছাড়াতে পারে বলে আশা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে মতে, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজশাহীতে মোট আমের আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছে ১১ দশমিক ৯৬ মেট্রিক টন। সম্ভাব্য মোট উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪০ দশমিক ৫৩ মেট্রিক টন আম, যার বিক্রয় মূল্য ছিল প্রায় ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৬২ হাজার ১২০ টাকা।
আর গত ২০২০-২১ মৌসুমে মোট আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছে ১২ দশমিক ১০১ মেট্রিক টন। সম্ভাব্য মোট উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ১২৮ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন আম। রাজশাহী জেলাজুড়ে আম বিক্রি হয়েছে প্রায় ৮৬ কোটি ৮৫ লাখ ১২ হাজার টাকার।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল আলীম বলেন, চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ধরা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন। গতবারের চেয়ে জেলায় এবার ৫৮২ হেক্টর জমিতে আম চাষ বেশি হওয়ায় উৎপাদন অন্য যে কোনো সময়ের রেকর্ড ভাঙবে বলে মনে করছেন এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।
আব্দুল আলীম বলেন, চলতি মৌসুমে আমের জন্য আবহাওয়া বেশ অনুকূলে রয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় মাটি পর্যাপ্ত পানি পেয়েছে। আবার অনেক কৃষক সবজি চাষের পাশাপাশি জমিতে আম গাছ লাগিয়েছেন। এতে গাছ পর্যাপ্ত পুষ্টি পেয়েছে। এসব কারণে এবার মুকুলও বেশি দেখা যাচ্ছে।
চারঘাটের আম চাষি আব্দুল মজিদ বলেন, এবার গাছে বিপুল পরিমাণ মুকুল এসেছে। গুটিও ভালো আসছে। তাই ফলন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়াটা একটু ভালো থাকলেই হয়।
তিনি আরও বলেন, গাছে মুকুল থাকাকালে কয়েকবার বৃষ্টির প্রয়োজন। বৃষ্টি হলেই চিন্তা নাই। আর বৃষ্টি না হলে ওষুধ মেশানো পানি গাছের মুকুলে স্প্রে করতে হবে যাতে মুকুল ঝরে না পড়ে।
রাজশাহীর কাটাখালীর হাজরা পুকুর এলাকার বাসিন্দা কোয়েল মল্লিক বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে আম গাছে পরিচর্যা কম করতে হয়। আবার খরচও কম। এ কারণে আমার দুই বিঘা জমিতে গতবার আম গাছ লাগিয়েছি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ হিল কাফী বলেন, এবার সন্ধ্যা নামতে নামতেই থাকছে হাল্কা শীত। আবার সকালেও বেশ ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে। রাতে কিছু কুয়াশা পড়ছে। আবার গেলো বর্ষা মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাত আম চাষিদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ ভূমিকা রাখছে। সবমিলিয়ে এবার আমের জন্য সম্ভাবনাময় সময় বলে মনে হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ হিল কাফী বলেন, গতবারও আমের ফলন খুব ভালো ছিল। কিন্তু সেই তুলনায় চাষিরা দাম পাননি। কারণ করোনা ও লকডাউন ছিল। এবার এমন কিছুই নেই। উপরন্তু এবার সামনে ঈদ। ঈদ শেষেই পাওয়া যাবে গাছপাকা আম। আর তাই সবদিক থেকেই এবার আম চাষিরা লাভবান হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।