ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

আমার শিহাব নাই, আমাগো ঈদও নাই – শিহাবের মা

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
৩ বছর আগে একবার দেশে আসছিলো শিহাবের বাপে, ওইসময়ই শিহাবের সঙ্গে ওর বাপের শেষ দেখা।
গত কোরবানির ঈদে শিহাব ফোনে বাপেরে কইছিলো, সে একটা বড় গরু কোরবানি দিতে চায়।
সেজন্য এইবার ওর বাপে আগেই ট্যাকা পাঠাইয়া দিছিলো। এইবার আমার শিহাব নাই, আমাগো ঈদও নাই।’

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলেন সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাসে খুন হওয়া শিহাবের মা আসমা বেগম।

কথা হয় শিহাবের প্রবাসী বাবা ইলিয়াস হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরের দিনই আমি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে আসি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকেই সৃষ্টি স্কুলের প্রভাবশালী মালিকপক্ষ তদন্ত কাজে প্রভাব খাটাচ্ছে।

এসময় তিনি বলেন, যারা আমার সাথে আছে, শিহাবের হত্যার বিচার চাইতেছে, তারা যদি বিচারে সন্তুষ্ট হয়, তাহলে আমি সন্তুষ্ট।

তিনি আরো বলেন, আমি আগেও যেখানে ছিলাম, সেখানেই আছি, যে পর্যন্ত বিচার শেষ না হবে, অপেক্ষায় থাকবো। প্রত্যেকটা লোক যদি বিচার পায়, শান্তি পায়, তবেই আমি বিচার পাবো। এটা এখন আর আমার একার দাবী না, একার চাওয়া না, প্রতিটি অভিভাবকের দাবি। আপনারাই আমাদের অভিভাবক।

গত ২০ জুন টাঙ্গাইল শহরের সুপারি বাগান এলাকায় সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে এই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব মিয়ার (১১) মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে শিহাবের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

পরিবারের অভিযোগ, শিহাবের মরদেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল, এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু বা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। তাদের সন্তানকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাত্রাবাসের ৭ম তলায় একটি বাথরুমে শিহাব ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

রোববার (১০ জুলাই) ঈদের দিন শিহাবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান ও নাতির কথা মনে করে বারান্দায় বিলাপ করে কাঁদছেন শিহাবের মা-দাদি।

এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিহাবের সহপাঠী, সৃষ্টি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং টাঙ্গাইলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
তারা জানান দাবি আদায়ে আমরা এবার কঠোর আন্দোলনে নামবো।’

তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য – মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তদন্ত চলছে। প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’ তথ্য সূত্র – মির্জা শাকিল

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

আমার শিহাব নাই, আমাগো ঈদও নাই – শিহাবের মা

আপডেট টাইম ১১:৩৮:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জুলাই ২০২২

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
৩ বছর আগে একবার দেশে আসছিলো শিহাবের বাপে, ওইসময়ই শিহাবের সঙ্গে ওর বাপের শেষ দেখা।
গত কোরবানির ঈদে শিহাব ফোনে বাপেরে কইছিলো, সে একটা বড় গরু কোরবানি দিতে চায়।
সেজন্য এইবার ওর বাপে আগেই ট্যাকা পাঠাইয়া দিছিলো। এইবার আমার শিহাব নাই, আমাগো ঈদও নাই।’

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলেন সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাসে খুন হওয়া শিহাবের মা আসমা বেগম।

কথা হয় শিহাবের প্রবাসী বাবা ইলিয়াস হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরের দিনই আমি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে আসি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকেই সৃষ্টি স্কুলের প্রভাবশালী মালিকপক্ষ তদন্ত কাজে প্রভাব খাটাচ্ছে।

এসময় তিনি বলেন, যারা আমার সাথে আছে, শিহাবের হত্যার বিচার চাইতেছে, তারা যদি বিচারে সন্তুষ্ট হয়, তাহলে আমি সন্তুষ্ট।

তিনি আরো বলেন, আমি আগেও যেখানে ছিলাম, সেখানেই আছি, যে পর্যন্ত বিচার শেষ না হবে, অপেক্ষায় থাকবো। প্রত্যেকটা লোক যদি বিচার পায়, শান্তি পায়, তবেই আমি বিচার পাবো। এটা এখন আর আমার একার দাবী না, একার চাওয়া না, প্রতিটি অভিভাবকের দাবি। আপনারাই আমাদের অভিভাবক।

গত ২০ জুন টাঙ্গাইল শহরের সুপারি বাগান এলাকায় সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে এই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব মিয়ার (১১) মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে শিহাবের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

পরিবারের অভিযোগ, শিহাবের মরদেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল, এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু বা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। তাদের সন্তানকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাত্রাবাসের ৭ম তলায় একটি বাথরুমে শিহাব ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

রোববার (১০ জুলাই) ঈদের দিন শিহাবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান ও নাতির কথা মনে করে বারান্দায় বিলাপ করে কাঁদছেন শিহাবের মা-দাদি।

এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিহাবের সহপাঠী, সৃষ্টি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং টাঙ্গাইলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
তারা জানান দাবি আদায়ে আমরা এবার কঠোর আন্দোলনে নামবো।’

তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য – মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তদন্ত চলছে। প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’ তথ্য সূত্র – মির্জা শাকিল