ঢাকা ০৭:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

আটোয়ারীতে কোভিড-১৯ কেড়ে নিল সবজি চাষীদের সুখের স্বপ্ন

মোঃ ইউসুফ আলী, আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : হিমালয় কন্যা পঞ্চগড় জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে আটোয়ারী কৃষি প্রধান এলাকা হিসেবে ইতিমধ্যে দেশে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এখানকার উৎপাদিত ফসল ও শাক- সবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হতো নিয়মিত। সেই নিয়মের বাধা হয়েছে এবার চলমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ(কোভিড-১৯) পরিস্থিতি। প্রতিবছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমি বর্গা নেওয়া সবজি চাষীদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন এনজিওতে, কেউ কেউ সরকারীভাবে কৃষি ঋণ গ্রহণ করে, কেউ কেউ মহাজনদের কাছে উচ্চ সুদে ধার-দেনা করে আবার কেউ কেউ গৃহস্থালী পণ্য বিক্রি করে কিছু লাভের আশায় রাত-দিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে তরমুজ, করলা, লাউ, শসা, বেগুন ও টমেটো সহ রকমারী শাক-সবজি এবং ফসল উৎপাদন করে দিনাতিপাত করে আসছিল। কিন্তু এবার কোভিট-১৯ এর কারনে এলাকার সবজি চাষীদের মুনাফা অর্জনের স্বপ্ন যেন স্বপ্নেই থেকে গেল। এ প্রসঙ্গে কলেজমোড়স্থ মিশনের ৭ একর জমি বর্গা নেয়া কৃষক অশি^নী কুমার কান্না জড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, তিনি প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে লাউ, শশা, করলা, মরিচ ও টমেটোর আবাদ করেছেন এবং এখন পর্যন্ত মাত্র দেড় লক্ষ টাকার সবজি বিক্রয় করতে পেরেছেন। একই বেদনার কথা জানান মির্জাপুর পানবারা এলাকার কৃষক তোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, প্রায় ১৫ একর জমিতে সবজি চাষে খরচ করেছেন ২৫ লক্ষ টাকার অধীক কিন্তু বিক্রি করে পেয়েছেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা। একই অবস্থায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক কৃষক শারীরিকভাবে করোনায় আক্রান্ত না হলেও আর্থিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন মর্মে কৃষকরা জানান। কৃষকরা জানান, করোনায় দেশ প্রায় স্থবির হওয়ার কারণে তাদের উৎপাদিত পচনশীল সবজি রাজধানী ঢাকা সহ বাহিরে সরবরাহ করতে না পারায় স্ব স্ব এলাকায় নাম মাত্র মূল্যে স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট সবজি ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিস্থিত বিবেচনা নিয়ে অনেকে আবার সবজি ক্ষেত ভেঙ্গে নতুন করে ভূট্রার আবাদে ঝুকে পড়ছেন। এমতাবস্থায় সুখাতী গ্রামের মো: দেলোয়ার হোসেন, নলপুখরী গ্রামের মনোজ রায় হিরু ও মো: নাজির হোসেন, মো: রফিকুল ইসলাম সহ উপজেলার অনেক সবজি চাষী গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে সবজি চাষীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষনের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃিষ অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার প্রতি বর্গ ইঞ্চি জমিতে চাষাবাদের ব্যবস্থা করতে উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের উৎসাহিত করে আসছেন। কিন্তু আকষ্মিক করোনায় লকডাউনের কারনে ক্রেতা-আড়তদার না থাকায় এলাকার উৎপাদিত সবজি ঠিকমতো বাজারজাত করতে পারছেন না চাষীরা। আবার কিছু কিছু বাজারজাতের ব্যবস্থা থাকলেও নাম মাত্র দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। তিনি বলেন, সবজী চাষীদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ অথবা পৃথক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা না হলে উপজেলার কৃষকরা আগামী কয়েক বছরেও মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না বলে আমার আশংকা। উল্লেখ্য, উপজেলায় চলতি মৌসুমে সবজি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ৫১০ হেক্টর জমিতে (গড়ে ২২.৭৪ মে:টন প্রতি হেক্টরে) ধরা হয়েছে মোট ফলন ১১ হাজার ৬৬০ মে:টন।#

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

আটোয়ারীতে কোভিড-১৯ কেড়ে নিল সবজি চাষীদের সুখের স্বপ্ন

আপডেট টাইম ১০:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০

মোঃ ইউসুফ আলী, আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : হিমালয় কন্যা পঞ্চগড় জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে আটোয়ারী কৃষি প্রধান এলাকা হিসেবে ইতিমধ্যে দেশে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এখানকার উৎপাদিত ফসল ও শাক- সবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হতো নিয়মিত। সেই নিয়মের বাধা হয়েছে এবার চলমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ(কোভিড-১৯) পরিস্থিতি। প্রতিবছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমি বর্গা নেওয়া সবজি চাষীদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন এনজিওতে, কেউ কেউ সরকারীভাবে কৃষি ঋণ গ্রহণ করে, কেউ কেউ মহাজনদের কাছে উচ্চ সুদে ধার-দেনা করে আবার কেউ কেউ গৃহস্থালী পণ্য বিক্রি করে কিছু লাভের আশায় রাত-দিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে তরমুজ, করলা, লাউ, শসা, বেগুন ও টমেটো সহ রকমারী শাক-সবজি এবং ফসল উৎপাদন করে দিনাতিপাত করে আসছিল। কিন্তু এবার কোভিট-১৯ এর কারনে এলাকার সবজি চাষীদের মুনাফা অর্জনের স্বপ্ন যেন স্বপ্নেই থেকে গেল। এ প্রসঙ্গে কলেজমোড়স্থ মিশনের ৭ একর জমি বর্গা নেয়া কৃষক অশি^নী কুমার কান্না জড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, তিনি প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে লাউ, শশা, করলা, মরিচ ও টমেটোর আবাদ করেছেন এবং এখন পর্যন্ত মাত্র দেড় লক্ষ টাকার সবজি বিক্রয় করতে পেরেছেন। একই বেদনার কথা জানান মির্জাপুর পানবারা এলাকার কৃষক তোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, প্রায় ১৫ একর জমিতে সবজি চাষে খরচ করেছেন ২৫ লক্ষ টাকার অধীক কিন্তু বিক্রি করে পেয়েছেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা। একই অবস্থায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক কৃষক শারীরিকভাবে করোনায় আক্রান্ত না হলেও আর্থিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন মর্মে কৃষকরা জানান। কৃষকরা জানান, করোনায় দেশ প্রায় স্থবির হওয়ার কারণে তাদের উৎপাদিত পচনশীল সবজি রাজধানী ঢাকা সহ বাহিরে সরবরাহ করতে না পারায় স্ব স্ব এলাকায় নাম মাত্র মূল্যে স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট সবজি ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিস্থিত বিবেচনা নিয়ে অনেকে আবার সবজি ক্ষেত ভেঙ্গে নতুন করে ভূট্রার আবাদে ঝুকে পড়ছেন। এমতাবস্থায় সুখাতী গ্রামের মো: দেলোয়ার হোসেন, নলপুখরী গ্রামের মনোজ রায় হিরু ও মো: নাজির হোসেন, মো: রফিকুল ইসলাম সহ উপজেলার অনেক সবজি চাষী গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে সবজি চাষীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষনের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃিষ অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার প্রতি বর্গ ইঞ্চি জমিতে চাষাবাদের ব্যবস্থা করতে উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের উৎসাহিত করে আসছেন। কিন্তু আকষ্মিক করোনায় লকডাউনের কারনে ক্রেতা-আড়তদার না থাকায় এলাকার উৎপাদিত সবজি ঠিকমতো বাজারজাত করতে পারছেন না চাষীরা। আবার কিছু কিছু বাজারজাতের ব্যবস্থা থাকলেও নাম মাত্র দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। তিনি বলেন, সবজী চাষীদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ অথবা পৃথক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা না হলে উপজেলার কৃষকরা আগামী কয়েক বছরেও মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না বলে আমার আশংকা। উল্লেখ্য, উপজেলায় চলতি মৌসুমে সবজি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ৫১০ হেক্টর জমিতে (গড়ে ২২.৭৪ মে:টন প্রতি হেক্টরে) ধরা হয়েছে মোট ফলন ১১ হাজার ৬৬০ মে:টন।#