মাতৃভূমির খবর ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তথ্য গোপনের মামলায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার তাদের আট সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন দেওয়া হয়। আব্বাস দম্পতির পক্ষে আজ আদালতে ছিলেন অ্যাড. জয়নুল আবেদীন।
গত ৭ জানুয়ারি ২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন মামলাটি করেন।
আফরোজা আব্বাস দুদকে যে সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছিলেন তা নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফরোজা আব্বাস দুদকে দাখিলকৃত ২০ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৮ টাকার সম্পদের উৎস হিসেবে এম এন এইচ বুলুর কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ এবং মা-বাবা ও বোনের কাছ থেকে এক কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দান হিসেবে প্রাপ্ত হয়েছেন মর্মে উল্লেখ করেন। কিন্তু তার স্বপক্ষে কোনও দালিলিক তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি।
এ ছাড়া বাকি অর্থ অর্জনের স্বপক্ষেও কোনও রেকর্ডপত্র অনুসন্ধানকালে দেখাতে পারেননি। প্রকৃতপক্ষে তিনি নিজের অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপনকরণের অসৎ উদ্দেশ্যে দালিলিক প্রমাণবিহীন ভুয়া ঋণ গ্রহণ দেখিয়েছেন।
অনুসন্ধানকালে দুদকে দাখিলকৃত আফরোজা আব্বাসের সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার ৮ লাখ ৭০ হাজার ৭০৬টি, যার মূল্য ৮ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ৬০০ টাকা, ঢাকা টেলিফোন কোম্পানি লিমিটেডের এক লাখ শেয়ারের মূল্য ১০ কোটি টাকা, এফডিআর ও ডিপিএস-এ বিনিয়োগ ১৪ লাখ ৯ হাজার ৯৫৮ টাকা, ঢাকা টেলিফোন কোম্পানিকে ঋণ প্রদান এক কোটি টাকা, আত্মীয়-স্বজনদের ঋণ প্রদান ৪৫ লাখ টাকা, হাতে নগদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স ৫ লাখ টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার ক্রয় ৪২ লাখ ১১ হাজার ৮০৫ টাকাসহ মোট ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৩৬৩ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
দুদকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, মিসেস আফরোজা আব্বাসের নামে অর্জিত ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৩৬৩ টাকার সম্পদ প্রকৃতপক্ষে তার স্বামী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের সহায়তায় অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত। তাছাড়া মির্জা আব্বাস ১৯৯১ সালের আগে উল্লেখযোগ্য কোনও আয় ছিল না। তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে তারা ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ওই টাকার সম্পদ অর্জন করেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-৮ আসনে মির্জা আব্বাস ও ঢাকা-৯ আসনে আফরোজা আব্বাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।