ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রামগড়ে পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র জামে মসজিদ নিয়ে নানা বির্তক দ্রুত সমাধান চায় সাধারণ মুসল্লী ও এলাকাবাসী বগুড়ার শিবগঞ্জে ট্রাকচাপায় দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র নিহত রানীশংকৈল মডেল স্কুলের আলোচিত ধীরেন্দ্রনাথ সহ ৪ শিক্ষক বদলি । কুষ্টিয়ায় ব্যাংক কর্মকর্তার পুরুষাঙ্গ কর্তন মামলায় স্ত্রীর কারাদন্ড টাঙ্গাইলে বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা, যুক্ত হচ্ছে মাদক সেবনের সাথেও জবি ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যা: সহপাঠি ও প্রক্টরের ২জনের রিমান্ড মঞ্জুর। “পাঁচ দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধন” যুবলীগ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে.. দিদারুল ইসলাম চৌধুরী দুমকিতে ১২ ঘন্টার মধ্যে র‍্যাবের ফাঁদে পলায়নরত ধর্ষক আটক। সন্তানের চাকরি স্থায়ীকরন চেয়ে লক্ষ্মীপুরে পঙ্গু বাবার আকুতি

অষ্টগ্রামের হোসাইনী প্রেমিকগন প্রায় ১৬০ বছর ধরে কারবালার শোক পালন করে আসছে।

বিশেষ সংবাদদাতা , অষ্টগ্রাম
মহানবী (সাঃ) এর প্রাণপ্রীয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন রাঃকে ৬১ হিজরির ১০ মহরম লেবাসী মুনাফেকি মুসলমানদের হাতে শাহাদাৎ বরণ করেন। এই শাহাদাতের মধ্য দিয়ে কারবালার প্রান্তরে ইসলাম পূর্ণজীবিত হয়। তাই মুসলমানদের সর্বোচ্চ শোকাবহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে রোজা, জারি-মর্সিয়া, তাজিয়া মিছিল তাবারক বিতরন সহ শোকাবহ পরিবেশে, ১২দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহি আশুরা পালিত হচ্ছে প্রায় ১৬০বছর ধরে। ১-১০মহরম লাল কালো পতাকা উঠানোর মধ্যদিয়ে শুরু এবং শেষ হয় তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমে। এই শোকানুষ্ঠানে অষ্টগ্রামের হাজারো সুন্নী হোসাইন প্রেমিকগন ঐতিহাসিক হাবেলী বাড়ীরর হোসাইনী মোকামে জরিত হয়ে হায় হোসাই হায় হাসান ধ্বনিতে ইমামের শোকে অশ্রুবিসর্জন করে থাকে।

ঐতিহ্যবাহী শোকাবহ মহরমে মুল আনুষ্ঠানিকতা ১লা মহরম থেকে সূচনা হয়ে ১০ মহরম তাজিয়া মিসিলের মাধ্যমে স্থানীয় কারবালা নামক স্থানেগিয়ে মহরমের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় । সুন্নীদের মধ্যে মহরম অনুষ্ঠানের প্রধান প্রবক্তা হলেন হযরত শাহজালাল রহঃ এর সহচর সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিন রহঃএর ১৩তম বংশধর জোয়ান শাহী পরগনার নয় কোষা জমিদারী ত্যাগি ভাটির অলী বলে খ্যাত হযরত সৈয়দ আব্দুল করিম আল-হোসাইনী রহঃ যনি সৈয়দ আলাই মিয়া সাহেব বলে বেশী পরিচিত। উনার প্রধান বাক্য উক্তি ছিল ” গুরু শস্য লোভী কামী উভয় নরকগামী ” এবং ভোগে নয় ত্যাগেই খোদা প্রাপ্তি হয়। তিনি জমিদারি ত্যাগকরে একটি জীর্ন কুটিরে অবস্থান করে ধ্যান সাধনায় থাকতেন। তিনি হোসাইন প্রেমে সর্বদায় মুহ্যমান হয়ে উনার ভক্তদের হোসাইনী প্রেমে উদ্বোধ্য করে গেছেন। তাদের শিক্ষা দেন মহরমে চাঁদ দেখার পর হতে হাবলীবাড়ি ইমামবাড়ায় শুরু হয়, লাল কালো নিশান উত্তোলন, ফজর নামজ বাদ জারি,মাতম মর্সিয়া, রোজা রাখা, নিরামিষ জাতীয় সাধারন মানের খাবার গ্রহন, খালি পা ও মাটিতে শয়ন তাবারক বিতরণসহ নানা রকম শোকানুষ্ঠান।একই অবস্থা চলে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অর্ধশত ইমামবাড়ায়। শুধু তাই নয় উনার নিয়মে মহরম পালিত হয় কিশোরগঞ্জের ভৈরব, হোসেনপুর, ভাগলপুর ও বৌলাই। নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি ও মদন। বিবাড়িয়া জেলার সরাইল, ও নাসিরনগর। হবিগঞ্জের সুলতানশী হাবেলীস প্রায় ১০১ গ্রামে এই নিয়মে মহরম পালিত হয়ে আসছে। এছাড়াও সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ আরো অনক এলাকাতেই একই নিয়মে মহরম পালন করে থাকে। দশ দিনের মধ্যে মূল অনুষ্ঠান হয়ে থাকে ৯ ও ১০ মহরম।
৯ই মহরম ১২ টা ১মিনিটে ইমাম হোসাইনের রোহানী ফয়েজ হাসিলের উদ্দেশ্যে হাবলীবাড়ি ইমামবাড়ায় গর্স্ত (প্রদক্ষিণ) ও ১০ই মহরম স্থানীয় কারবালায় তাজিয়া মিছিলের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি হয় ঐতিহ্যবাহী অষ্টগ্রামের আশুরার।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় দেওয়ানগন অন্যত্র চলে যাওয়ায় ‘দেওয়ান বাড়ির’ নাম পরিবর্তন হয়ে হাওলীবাড়ি এখন ‘হাবেলীবাড়ি’কে কেন্দ্র করেই প্রায় ১৬০ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে শোকাবহ আশুরা অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ইতিহাসে পাওয়া যায় তিনি হঠাৎ আধ্যাত্মিক সাধনায় বিমগ্নন হয়ে যাওয়ায় আনাদায়ী খাজনার দায়ে১৮৩৬ সালে ন’কোষা জমিদারি’ বিলুপ্ত ঘোষণা হয়।
হুমায়ূন মিয়া বলেন, আমরা বংশ পরম্পরায় নবী মোহাম্মদ (সাঃ) নাতিদের শোকে দিবসগুলো পালন করে আসছি। যাদের শাহাদাৎের মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণজীবিত হয়েছে, তাদের জন্য এইটুকু ত্যাগ করতে না পারলে আমরা কিসের মুসলমান। ঈমানী দায়িত্বতে আমরা শোকাবহ মহরম পালন করি।

এই বিষয়ে হাবিলীবাড়ি সন্তান সদর ইউপির বর্তমানন চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন এইশোক পালনে যথেষ্ট কোরবন হাদিসের দলীল রয়েছে। যেহেতো যিনাদের ভালবাসা আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন এবং রাসুল নিজে যেমন প্রানাধীক ভালবাসে দেখিগে ও বলে গছেন এমন কি সাহাবায়ে কেরামগন ভালবেসে আমারদের শিক্ষা দিয়ে গেছন বলেই আমরা সেই প্রেমের বহিঃপ্রকাশ করতে গিয়ে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান করা হয়ে আসছে। মূল কথা হলো এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা হসিদের প্রাতি সম্মান জ্ঞাপন ও মিথ্যার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে থাকি। বিশেষ সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেন কিছু মুনাফিক এইদানিং অহলেবায়তের প্রেমিক শেজে সাহাবাদের সমালোচনা করে সুন্নিদের মধ্যে ঐক্য নষ্ট করার পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে তাদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে। মহরম মানুষেরম মানুষদের ধৈর্য ত্যাগ ন্যায় পরায়নতার প্রতি উদ্ভোদ্ব্য এবং সত্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে অনুপ্রানিত করে।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রামগড়ে পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র জামে মসজিদ নিয়ে নানা বির্তক দ্রুত সমাধান চায় সাধারণ মুসল্লী ও এলাকাবাসী

অষ্টগ্রামের হোসাইনী প্রেমিকগন প্রায় ১৬০ বছর ধরে কারবালার শোক পালন করে আসছে।

আপডেট টাইম ১০:১০:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ অগাস্ট ২০২২

বিশেষ সংবাদদাতা , অষ্টগ্রাম
মহানবী (সাঃ) এর প্রাণপ্রীয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন রাঃকে ৬১ হিজরির ১০ মহরম লেবাসী মুনাফেকি মুসলমানদের হাতে শাহাদাৎ বরণ করেন। এই শাহাদাতের মধ্য দিয়ে কারবালার প্রান্তরে ইসলাম পূর্ণজীবিত হয়। তাই মুসলমানদের সর্বোচ্চ শোকাবহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে রোজা, জারি-মর্সিয়া, তাজিয়া মিছিল তাবারক বিতরন সহ শোকাবহ পরিবেশে, ১২দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহি আশুরা পালিত হচ্ছে প্রায় ১৬০বছর ধরে। ১-১০মহরম লাল কালো পতাকা উঠানোর মধ্যদিয়ে শুরু এবং শেষ হয় তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমে। এই শোকানুষ্ঠানে অষ্টগ্রামের হাজারো সুন্নী হোসাইন প্রেমিকগন ঐতিহাসিক হাবেলী বাড়ীরর হোসাইনী মোকামে জরিত হয়ে হায় হোসাই হায় হাসান ধ্বনিতে ইমামের শোকে অশ্রুবিসর্জন করে থাকে।

ঐতিহ্যবাহী শোকাবহ মহরমে মুল আনুষ্ঠানিকতা ১লা মহরম থেকে সূচনা হয়ে ১০ মহরম তাজিয়া মিসিলের মাধ্যমে স্থানীয় কারবালা নামক স্থানেগিয়ে মহরমের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় । সুন্নীদের মধ্যে মহরম অনুষ্ঠানের প্রধান প্রবক্তা হলেন হযরত শাহজালাল রহঃ এর সহচর সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিন রহঃএর ১৩তম বংশধর জোয়ান শাহী পরগনার নয় কোষা জমিদারী ত্যাগি ভাটির অলী বলে খ্যাত হযরত সৈয়দ আব্দুল করিম আল-হোসাইনী রহঃ যনি সৈয়দ আলাই মিয়া সাহেব বলে বেশী পরিচিত। উনার প্রধান বাক্য উক্তি ছিল ” গুরু শস্য লোভী কামী উভয় নরকগামী ” এবং ভোগে নয় ত্যাগেই খোদা প্রাপ্তি হয়। তিনি জমিদারি ত্যাগকরে একটি জীর্ন কুটিরে অবস্থান করে ধ্যান সাধনায় থাকতেন। তিনি হোসাইন প্রেমে সর্বদায় মুহ্যমান হয়ে উনার ভক্তদের হোসাইনী প্রেমে উদ্বোধ্য করে গেছেন। তাদের শিক্ষা দেন মহরমে চাঁদ দেখার পর হতে হাবলীবাড়ি ইমামবাড়ায় শুরু হয়, লাল কালো নিশান উত্তোলন, ফজর নামজ বাদ জারি,মাতম মর্সিয়া, রোজা রাখা, নিরামিষ জাতীয় সাধারন মানের খাবার গ্রহন, খালি পা ও মাটিতে শয়ন তাবারক বিতরণসহ নানা রকম শোকানুষ্ঠান।একই অবস্থা চলে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অর্ধশত ইমামবাড়ায়। শুধু তাই নয় উনার নিয়মে মহরম পালিত হয় কিশোরগঞ্জের ভৈরব, হোসেনপুর, ভাগলপুর ও বৌলাই। নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি ও মদন। বিবাড়িয়া জেলার সরাইল, ও নাসিরনগর। হবিগঞ্জের সুলতানশী হাবেলীস প্রায় ১০১ গ্রামে এই নিয়মে মহরম পালিত হয়ে আসছে। এছাড়াও সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ আরো অনক এলাকাতেই একই নিয়মে মহরম পালন করে থাকে। দশ দিনের মধ্যে মূল অনুষ্ঠান হয়ে থাকে ৯ ও ১০ মহরম।
৯ই মহরম ১২ টা ১মিনিটে ইমাম হোসাইনের রোহানী ফয়েজ হাসিলের উদ্দেশ্যে হাবলীবাড়ি ইমামবাড়ায় গর্স্ত (প্রদক্ষিণ) ও ১০ই মহরম স্থানীয় কারবালায় তাজিয়া মিছিলের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি হয় ঐতিহ্যবাহী অষ্টগ্রামের আশুরার।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় দেওয়ানগন অন্যত্র চলে যাওয়ায় ‘দেওয়ান বাড়ির’ নাম পরিবর্তন হয়ে হাওলীবাড়ি এখন ‘হাবেলীবাড়ি’কে কেন্দ্র করেই প্রায় ১৬০ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে শোকাবহ আশুরা অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ইতিহাসে পাওয়া যায় তিনি হঠাৎ আধ্যাত্মিক সাধনায় বিমগ্নন হয়ে যাওয়ায় আনাদায়ী খাজনার দায়ে১৮৩৬ সালে ন’কোষা জমিদারি’ বিলুপ্ত ঘোষণা হয়।
হুমায়ূন মিয়া বলেন, আমরা বংশ পরম্পরায় নবী মোহাম্মদ (সাঃ) নাতিদের শোকে দিবসগুলো পালন করে আসছি। যাদের শাহাদাৎের মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণজীবিত হয়েছে, তাদের জন্য এইটুকু ত্যাগ করতে না পারলে আমরা কিসের মুসলমান। ঈমানী দায়িত্বতে আমরা শোকাবহ মহরম পালন করি।

এই বিষয়ে হাবিলীবাড়ি সন্তান সদর ইউপির বর্তমানন চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন এইশোক পালনে যথেষ্ট কোরবন হাদিসের দলীল রয়েছে। যেহেতো যিনাদের ভালবাসা আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন এবং রাসুল নিজে যেমন প্রানাধীক ভালবাসে দেখিগে ও বলে গছেন এমন কি সাহাবায়ে কেরামগন ভালবেসে আমারদের শিক্ষা দিয়ে গেছন বলেই আমরা সেই প্রেমের বহিঃপ্রকাশ করতে গিয়ে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান করা হয়ে আসছে। মূল কথা হলো এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা হসিদের প্রাতি সম্মান জ্ঞাপন ও মিথ্যার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে থাকি। বিশেষ সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেন কিছু মুনাফিক এইদানিং অহলেবায়তের প্রেমিক শেজে সাহাবাদের সমালোচনা করে সুন্নিদের মধ্যে ঐক্য নষ্ট করার পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে তাদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে। মহরম মানুষেরম মানুষদের ধৈর্য ত্যাগ ন্যায় পরায়নতার প্রতি উদ্ভোদ্ব্য এবং সত্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে অনুপ্রানিত করে।