ঢাকা ০৬:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন গজারিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে দিনভর গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন গজারিয়ায় নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভয়ঙ্কর ডাকাত সর্দার মামুন গ্রেফতার বগুড়ায় অবকাশ হোটেলে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ৯ জন খরিদ্দারকে দুই দিনের কারাদণ্ড দিলেন আদালত নানা বাড়ি বেড়াতে এসে নদীতে ডুবে কিশোর কিশোরীর মৃত্যু

অভিভাবকহীন নবীনগর ছাত্রলীগ

অভিভাবকহীন নবীনগর ছাত্রলীগ

মো. খলিলুর রহমান, ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা, কলেজ ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি নেই বিগত তিন বছর যাবৎ। সংগঠনকে গতিশীল করার ল্েয জেলা ছাত্রলীগ ২০১৯ সালে নবীনগর উপজেলা, কলেজ ও পৌর শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষইা করেন। বিলুপ্ত হওয়ার তিন বছর পার হলেও নতুন করে আর কোন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এতে করে নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি চর্চা হচ্ছে না বললেই চলে।

জানা যায়, ১৯৯৮ সালে খাইরুল-নাছিরকে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের নেতৃত্বে উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নের কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৪ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে খাইরুল-নাছির বিদায় নেয়ার পর দুঃখজনক হলেও সত্য তাদের অনুমোদিত অনেক ইউনিয়ন কমিটি এখনো চলমান রয়েছে। এক কথায় ১৯৯৮ সালের পর নবীনগরের সকল ইউনিয়নের কমিটি এক যোগে করা হয়নি।

খাইরুল-নাছিরের পর ২০০৪ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বে আসেন খায়ের-রিপন। খায়ের-রিপন দায়িত্বে আসার পর ১৭টি ইউনিয়নের কমিটি নতুন করে আবার করা হয় বলে দাবী করেন তৎকালীন সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রিপন।

ইউনিয়ন পর্যায়ে যাচাই করে দেখা গেছে ১৭ টি ইউনিয়ন কমিটি হয় খায়ের রিপনের সময়ে। ২০১১ সালে উপজেলা ছাত্রলীগকে গতিশীল করার জন্য পারভেজ ও জনিকে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার কয়েক মাস পরে পারভেজ হোসেন একটি খুনের মামলার আসামী হয় এবং এই মর্মে তৎকালীন আহবায়ক পারভেজ হোসেন বলেন আমি দায়িত্বে ছিলাম দেড় বছর, আমার সময়ে আমি তিনটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার কমিটি করি। আমি নবীনগর সরকারী কলেজকে অনার্স কলেজে রূপান্তরিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি। পারভেজ হোসেন বলেন আমাকে একটি হত্যা মামলার মিথ্যা অভিযোগে আসামী করায় পরবর্তিতে কাজ করতে পারি নাই এবং ২০১২ -এর শেষের দিকে আমার কমিটি বিলুপ্ত করে দেয়।

এতে করে আবার উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। দীর্ঘ দুই বছর পর ২০১৪ সালের জুলাই মাসে রোমান ও মামুনকে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়। রোমান-মামুন উপজেলা ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করার লে উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ টি ইউনিয়ন কমিটি করতে সম হয়। কাইতলা দক্ষিণ -এর সম্মেলন করে আসলেও রহস্যজনক কারণে তারা কমিটি দিতে ব্যর্থ হয়। রোমান-মামুনের কমিটি ২০১৯ সালে বিলুপ্ত হওয়ার তিন বছর পার হলেও নতুন করে আর নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি হয়নি।

নবীনগর সরকারি কলেজ শাখা কমিটির সভাপতি হাবিব ও সাধারন সম্পাদক ভিপি আব্দুর রহমান এর কলেজ কমিটি ১৯৯৮ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে বিদায় নেয়ার পর কলেজ ছাত্রলীগের গতিশীলতা কমতে থাকে। কারণ হিসেবে জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী ছাত্রনেতাদের উপজেলা কমিটিতে স্থান না দিয়ে নবীনগর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগে পদ দেয়া হয়। বাবুল ও ফরিদকে ১৯৯৮ সালে কলেজ কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়। তৎকালীন সময়ে বাবুল কলেজের নিয়মিত ছাত্র না হওয়ায় কলেজ কেন্দ্রিক রাজনীতি করতে নিরুৎসাহী বোধ করে। পরবর্তিতে ২০০৪ জাহাঙ্গীর ও মোস্তফা আসে কলেজ কমিটির নেতৃত্বে। নবীনগর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ আবার আলোর মুখ দেখে তাদের নেতৃত্বে কিন্তু কলেজ ছাত্রলীগের তৎকালীন সেক্রেটারী মোস্তফা কামাল ঢাকায় চলে যাওয়ায় কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আবারো ভাটা পরে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের কমিটি ২০০৪-২০১৪ পর্যন্ত প্রতিটি লড়াই সংগ্রাম আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছি। পরবর্তি সময়ে তৎকালিন জাতীয় সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল সাহেবের চেষ্টায় রাজিবকে আহবায়ক, নাছির ও সাদ্দামকে যুগ্ম আহবায়ক করে নবীনগর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন করা হয়। তবে ২০১৯ সালে জেলা ছাত্রলীগ তাদের কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।

মনির ও পরশকে দায়িত্ব দিয়ে ২০০৫ সালে প্রথম শুরু করা হয় নবীনগর পৌর ছাত্রলীগের কমিটি। মনির ও পরশ কোন ওয়ার্ড কমিটি করতে পারেননি। তারপর ২০১৯ সালে পৌর ছাত্রলীগের দায়িত্বে আসেন লিমন- জেমস। লিমন-জেমস এর মাধ্যমে ৫টি ওয়ার্ড কমিটি হয়। তৎকালীন সাধারন সম্পাদক জেমস বলেন, আমরা নয়টি ওয়ার্ড কমিটি করতে পারলে সফল হতাম, কিন্তু নানা জটিলতার কারণে আমরা আর চারটি ওয়ার্ড কমিটি করতে পারিনি। তাদের কমিটি বিলুপ্তির পর আর কোন কমিটি হয়নি।

এই অবস্থায় উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী আবু সায়েদ, নাছির উল্লাহ, নাজিম হোসেন, রকি, এহসান, সুমিত, মোবারক, সবুর, তুষার, মোশারফ, রুম্মান, মেহেদী, সামিরের মত ছাত্রনেতারা খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি দেয়ার দাবী জানান।

নাম প্রকাশে অন ইচ্ছুক সাবেক এক ছাত্রনেতা বলেন বিগত নবীনগর উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবী বহন করা দুই চার জন ছাত্রনেতার পরিবারের অনেক সদস্য ভিন্ন রাজনীতির মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিল, আগামী কমিটিতেও এমন অনেক ছাত্রনেতা পদ প্রত্যাশী যাদের পরিবারের অনেক সদস্যও ভিন্ন রাজনীতির আদর্শে বিশ্বাসী। মূলত এই কারণটি ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ার পিছনে দায়ী।

উপজেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী নাজিম হোসেন ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটি দিতে জেলা ছাত্রলীগকে অনুরোধ করেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবুসায়েদ বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ আমি উপজেলা ছাত্রলীগে শ্রম দিয়ে আসছি, দুর্দিনে ছাত্রলীগের জন্য রাজপথে কাজ করেছি, আশা করি নবীনগরের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ জেলা ছাত্রলীগ আমাদের মূল্যায়ন করবে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রিপন বলেন মাঠ পর্যায়ে ছাত্রলীগ কাজ না করায় এবং ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতৃত্বের প্রতি বর্তমান ছাত্রলীগ ভরসা রাখতে না পারায় নতুন করে কমিটি হতে বিলম্ব হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।

সাবেক জিএস খাইরুল আমীন ও সাবেক ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান বলেন, নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের যে সকল কর্মিরা অংশ গ্রহন করে থাকে তাদেরকে মূল্যায়নের অনুরোধ করছি।

ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারন সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন এর নিকট জানতে চাইলে তারা বলেন, নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ ফয়জুর রহমান বাদল ও বর্তমান সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুল এর মতের অমিল থাকায় কমিটি অনুমোদন দিতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। উনাদের সমন্বয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে আমাদের অবগত করলে দ্রæততম সময়ে কমিটি অনুমোদন দিতে পারব।

এছাড়াও উপজেলা ছাত্রলীগ ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দ্রæত সময়ে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক ছাত্রলীগের কমিটি করার দাবী করেন।

নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এম.এ হালিম -এর নিকট এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তিতে একাধিকবার ফোন করেও উনার সাথে কথা বলা যায়নি।

প্রেরক: মো. খলিলুর রহমান, ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি:

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

অভিভাবকহীন নবীনগর ছাত্রলীগ

আপডেট টাইম ০৯:৫২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১

অভিভাবকহীন নবীনগর ছাত্রলীগ

মো. খলিলুর রহমান, ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা, কলেজ ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি নেই বিগত তিন বছর যাবৎ। সংগঠনকে গতিশীল করার ল্েয জেলা ছাত্রলীগ ২০১৯ সালে নবীনগর উপজেলা, কলেজ ও পৌর শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষইা করেন। বিলুপ্ত হওয়ার তিন বছর পার হলেও নতুন করে আর কোন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এতে করে নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি চর্চা হচ্ছে না বললেই চলে।

জানা যায়, ১৯৯৮ সালে খাইরুল-নাছিরকে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের নেতৃত্বে উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নের কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৪ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে খাইরুল-নাছির বিদায় নেয়ার পর দুঃখজনক হলেও সত্য তাদের অনুমোদিত অনেক ইউনিয়ন কমিটি এখনো চলমান রয়েছে। এক কথায় ১৯৯৮ সালের পর নবীনগরের সকল ইউনিয়নের কমিটি এক যোগে করা হয়নি।

খাইরুল-নাছিরের পর ২০০৪ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বে আসেন খায়ের-রিপন। খায়ের-রিপন দায়িত্বে আসার পর ১৭টি ইউনিয়নের কমিটি নতুন করে আবার করা হয় বলে দাবী করেন তৎকালীন সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রিপন।

ইউনিয়ন পর্যায়ে যাচাই করে দেখা গেছে ১৭ টি ইউনিয়ন কমিটি হয় খায়ের রিপনের সময়ে। ২০১১ সালে উপজেলা ছাত্রলীগকে গতিশীল করার জন্য পারভেজ ও জনিকে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার কয়েক মাস পরে পারভেজ হোসেন একটি খুনের মামলার আসামী হয় এবং এই মর্মে তৎকালীন আহবায়ক পারভেজ হোসেন বলেন আমি দায়িত্বে ছিলাম দেড় বছর, আমার সময়ে আমি তিনটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার কমিটি করি। আমি নবীনগর সরকারী কলেজকে অনার্স কলেজে রূপান্তরিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি। পারভেজ হোসেন বলেন আমাকে একটি হত্যা মামলার মিথ্যা অভিযোগে আসামী করায় পরবর্তিতে কাজ করতে পারি নাই এবং ২০১২ -এর শেষের দিকে আমার কমিটি বিলুপ্ত করে দেয়।

এতে করে আবার উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। দীর্ঘ দুই বছর পর ২০১৪ সালের জুলাই মাসে রোমান ও মামুনকে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়। রোমান-মামুন উপজেলা ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করার লে উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ টি ইউনিয়ন কমিটি করতে সম হয়। কাইতলা দক্ষিণ -এর সম্মেলন করে আসলেও রহস্যজনক কারণে তারা কমিটি দিতে ব্যর্থ হয়। রোমান-মামুনের কমিটি ২০১৯ সালে বিলুপ্ত হওয়ার তিন বছর পার হলেও নতুন করে আর নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি হয়নি।

নবীনগর সরকারি কলেজ শাখা কমিটির সভাপতি হাবিব ও সাধারন সম্পাদক ভিপি আব্দুর রহমান এর কলেজ কমিটি ১৯৯৮ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে বিদায় নেয়ার পর কলেজ ছাত্রলীগের গতিশীলতা কমতে থাকে। কারণ হিসেবে জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী ছাত্রনেতাদের উপজেলা কমিটিতে স্থান না দিয়ে নবীনগর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগে পদ দেয়া হয়। বাবুল ও ফরিদকে ১৯৯৮ সালে কলেজ কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়। তৎকালীন সময়ে বাবুল কলেজের নিয়মিত ছাত্র না হওয়ায় কলেজ কেন্দ্রিক রাজনীতি করতে নিরুৎসাহী বোধ করে। পরবর্তিতে ২০০৪ জাহাঙ্গীর ও মোস্তফা আসে কলেজ কমিটির নেতৃত্বে। নবীনগর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ আবার আলোর মুখ দেখে তাদের নেতৃত্বে কিন্তু কলেজ ছাত্রলীগের তৎকালীন সেক্রেটারী মোস্তফা কামাল ঢাকায় চলে যাওয়ায় কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আবারো ভাটা পরে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের কমিটি ২০০৪-২০১৪ পর্যন্ত প্রতিটি লড়াই সংগ্রাম আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছি। পরবর্তি সময়ে তৎকালিন জাতীয় সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল সাহেবের চেষ্টায় রাজিবকে আহবায়ক, নাছির ও সাদ্দামকে যুগ্ম আহবায়ক করে নবীনগর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন করা হয়। তবে ২০১৯ সালে জেলা ছাত্রলীগ তাদের কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।

মনির ও পরশকে দায়িত্ব দিয়ে ২০০৫ সালে প্রথম শুরু করা হয় নবীনগর পৌর ছাত্রলীগের কমিটি। মনির ও পরশ কোন ওয়ার্ড কমিটি করতে পারেননি। তারপর ২০১৯ সালে পৌর ছাত্রলীগের দায়িত্বে আসেন লিমন- জেমস। লিমন-জেমস এর মাধ্যমে ৫টি ওয়ার্ড কমিটি হয়। তৎকালীন সাধারন সম্পাদক জেমস বলেন, আমরা নয়টি ওয়ার্ড কমিটি করতে পারলে সফল হতাম, কিন্তু নানা জটিলতার কারণে আমরা আর চারটি ওয়ার্ড কমিটি করতে পারিনি। তাদের কমিটি বিলুপ্তির পর আর কোন কমিটি হয়নি।

এই অবস্থায় উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী আবু সায়েদ, নাছির উল্লাহ, নাজিম হোসেন, রকি, এহসান, সুমিত, মোবারক, সবুর, তুষার, মোশারফ, রুম্মান, মেহেদী, সামিরের মত ছাত্রনেতারা খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি দেয়ার দাবী জানান।

নাম প্রকাশে অন ইচ্ছুক সাবেক এক ছাত্রনেতা বলেন বিগত নবীনগর উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবী বহন করা দুই চার জন ছাত্রনেতার পরিবারের অনেক সদস্য ভিন্ন রাজনীতির মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিল, আগামী কমিটিতেও এমন অনেক ছাত্রনেতা পদ প্রত্যাশী যাদের পরিবারের অনেক সদস্যও ভিন্ন রাজনীতির আদর্শে বিশ্বাসী। মূলত এই কারণটি ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ার পিছনে দায়ী।

উপজেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী নাজিম হোসেন ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটি দিতে জেলা ছাত্রলীগকে অনুরোধ করেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবুসায়েদ বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ আমি উপজেলা ছাত্রলীগে শ্রম দিয়ে আসছি, দুর্দিনে ছাত্রলীগের জন্য রাজপথে কাজ করেছি, আশা করি নবীনগরের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ জেলা ছাত্রলীগ আমাদের মূল্যায়ন করবে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রিপন বলেন মাঠ পর্যায়ে ছাত্রলীগ কাজ না করায় এবং ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতৃত্বের প্রতি বর্তমান ছাত্রলীগ ভরসা রাখতে না পারায় নতুন করে কমিটি হতে বিলম্ব হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।

সাবেক জিএস খাইরুল আমীন ও সাবেক ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান বলেন, নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের যে সকল কর্মিরা অংশ গ্রহন করে থাকে তাদেরকে মূল্যায়নের অনুরোধ করছি।

ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারন সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন এর নিকট জানতে চাইলে তারা বলেন, নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ ফয়জুর রহমান বাদল ও বর্তমান সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুল এর মতের অমিল থাকায় কমিটি অনুমোদন দিতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। উনাদের সমন্বয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে আমাদের অবগত করলে দ্রæততম সময়ে কমিটি অনুমোদন দিতে পারব।

এছাড়াও উপজেলা ছাত্রলীগ ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দ্রæত সময়ে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক ছাত্রলীগের কমিটি করার দাবী করেন।

নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এম.এ হালিম -এর নিকট এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তিতে একাধিকবার ফোন করেও উনার সাথে কথা বলা যায়নি।

প্রেরক: মো. খলিলুর রহমান, ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি: