আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের দায় নিলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, যেহেতু তার দায়িত্বের অধীনেই এ ঘটনা ঘটেছে, তাই দায়ও তার।
আরো পড়ুন : কক্সবাজারে একই পরিবারের ৪ জনকে গলা কেটে হত্যা
আগামী ১ অক্টোবর খাশোগি হত্যাকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের পিভিএস চ্যানেলের একটি ডকুমেন্টারিতে সৌদি যুবরাজের এই সাক্ষাৎকার ধারণ করা হয়। সেদিনই এটি প্রচারিত হওয়ার কথা রয়েছে।
খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে এ প্রথম মুখ খুললেন মোহাম্মদ বিন সালমান। পিবিএসের মার্টিন স্মিথকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুবরাজ বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকার সময় এটি হয়েছিল। তাই এ হত্যাকাণ্ডের সব দায় আমার।’
খাশোগি সৌদি রাজপরিবারের একজন সমালোচক ছিলেন এবং মৃত্যুর আগে বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। বিয়ের কাগজপত্রের জন্য তুরস্কের ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে গেলে সেখানে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।
এ হত্যার ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল তোলপাড় হয়। শুরু থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রিয়াদের জড়িত থাকার কথা জোরেসোরে শোনা যায়। প্রথমে এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে খাশোগিকে হত্যার দায় স্বীকার করে সৌদি সরকার। তারা এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছে। তবে এ ঘটনায় হোতা যুবরাজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি।
তুরস্কের তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী হিসেবে শুরুতেই নাম উঠে আসে সৌদি যুবরাজের। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও ওঠে আসে, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত। তার নির্দেশেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়।
খাসোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য গত জুলাই মাসে সৌদি সরকার তথা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকেও দায়ী করেছিলো জাতিসংঘ-ও। তারা এ হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজের প্রত্যক্ষ ভূমিকা নিয়ে আরো তদন্তের জন্য জোর সুপারিশ করেছে।
তখন জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যাগনেস কায়ামার্ড বলেছিলেন, সৌদি বিচার প্রক্রিয়ার মান গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা স্থগিত করা উচিৎ।
তিনি আরো বলেন, খাশোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য রয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সৌদি যুবরাজসহ ‘প্রত্যেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার’ ভূমিকা নিয়ে নতুন করে তদন্তেরও প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে সৌদি যুবরাজের এই বক্তব্যের পর এখন কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি তুরস্ক কিংবা জাতিসংঘ।