ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ “২৬শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ” –মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা হতে ৫৩ কেজি গাঁজাসহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০; মাদক বহনে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ। “মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন” ইন্দুরকানীতে দিনব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ করে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন … লালমনিরহাটে বৃষ্টির জন‍্য বিশেষ নামাজ আদায় মিছিল ও শোডাউন করায় মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মানিক দর্জিকে শোকজ

অপসাংবাদিকতা রুখতে সাংবাদিকদের শিঘ্রই ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারন করে দেওয়া উচিত

স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম:

সবসময় শুনে থাকি সাংবাদিকতার ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণের বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখছে। দেশের প্রচলিত কোনো আইন বা নীতিমালায় সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতার কোনো বিধানও নেই। তবে এবার সময় হয়েছে যোগ্যতার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার। না হলে হলুদ আর অপসাংবাদিকতায় হারিয়ে যাবে সবুজ সাংবাদিকতা।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইন-১৯৭৪ সংশোধন করে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতার বিষয়টি অতিশিঘ্রই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত শুধু উচিতই নয় বাস্তবায়নও দ্রুত করতে হবে,কিন্তু সবসময় শুনি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে কিন্তু সেই শুনা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তবে এবার তথ্য মন্ত্রী এই বিষয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করবে বলে আমার বিশ্বাস। যারা সিনিয়র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় সুনামের সহিত কাজ করে আসছেন তারা ব্যতিত নতুন যারা এই পেশায় যুক্ত হতে চাই প্রেস কাউন্সিলের উচিত তাদের ক্ষেত্রে নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারন করে দেওয়া।
তা নাহলে সাংবাদিকতার এই মহান পেশা থেকে মহান মানুষগুলো হারিয়ে যাবে,একসময় এদেশে গুনি/দক্ষ সাংবাদিকের অভাব দেখা দিবে যা একটি রাস্ট্র বা দেশের জন্য অশনিসংকেত।

সাংবাদিক হতে হলে যে একটু পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণের দরকার আছে সেটা সবাই স্বীকার করলেও শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা বললে অনেকে ক্ষেপে যান। আশা করি এবার সরকার যোগ্যতার বিষয়টি বাস্তবায়ন করার লক্ষে গভীর চিন্তা ভাবনা করবে। দুনিয়ায় এমন কোনো পেশা নেই যেখানে শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের দরকার হয় না। বাংলাদেশেই শুধু সাংবাদিকতা করতে হলে কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা বা প্রশিক্ষণ লাগে না। যেখানে একজন সরকারী ড্রাইভার/পিয়ন/মালী ও প্লাম্বার মিস্ত্রী হতে হলে নুন্যতম যোগ্যতা অষ্টম শ্রেনীর সার্টিফিকেট লাগে সেখানে সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে যেন সাতখুন মাফ। তাহলে কি সাংবাদিকদের কি কেউ ক্ষেপাতে চাইনা। না হলে প্রেস কাউন্সিল এ ব্যাপারে হার্ড লাইনে যাচ্ছেনা কেন? বাংলাদেশের সাংবাদিকতা ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার এটা বুঝতে কারও বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

শুধু সাংবাদিক নয় সম্পাদকের বিষয়েও একই অবস্হা। সাংবাদিকদের সবচে বড় পদ হল সম্পাদক। এইদেশে পদটি রীতিমত ধর্ষিত ও কলংকিত। ক, লিখতে কলম ভাঙ্গে এমন অনেকেই সম্পাদক বনে গেছেন। তারা সম্পাদক হলেনই বা কী করে, কে তাদের অনুমোদন দিল, এসব নিয়ে আর আলোচনাই হয় না। সম্পাদকদের অনেকেই সম্পাদনা করেন না। তারা টাকার জোরে পত্রিকা প্রকাশ করেন আর আইনের ফাঁকফোকড় গলিয়ে তারা নিজেরাই সম্পাদক বনে যান। জীবনে একদিনের জন্যও সাংবাদিকতা করেননি কিন্তু সরকারের কাছে জমা দেওয়া বায়োডাটায় লিখা আছে ১৫ বছর সাংবাদিকতা করেছেন- এই দেশে এমন সম্পাদকের অভাব নেই । যেখানে সম্পাদকদেরই কোনো যোগ্যতা লাগে না সেখানে তার অধীনে সাংবাদিকদের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হাস্যকরই হবে বটে। নিশ্চয়ই এবার সম্পাদক হতে হলেও কমপক্ষে কী কী যোগ্যতা লাগবে সেটিও নির্ধারণের চেষ্টা করবেন সরকার। আর সেই যোগ্যতা কী রকম হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা জরুরি। বিষয়টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো সন্দেহ নেই। তাই অতি শ্রিঘ্রই এব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হওয়া উচিত। সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলদেশ- পিআইবি, প্রেস কাউন্সিল, গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট,এরকম যত প্রতিষ্ঠান রয়েছে সবখানেই এই আলোচনা দরকার। কারণ সাংবাদিকতার মান দিনকে দিন যে নিম্নগামী সেটা বুঝতে কারও গবেষক হওয়ার দরকার নেই, মাঠ পর্যায়ে আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি পেশাটি নীতি নৈতিকতা আর দক্ষতার মাপকাঠিতে অনেকটাই নিচে নেমে গেছে। পত্রিকার সম্পাদকরাও এই দায় এড়াতে পারেনা।

আমরা জানি সাংবাদিকদের যোগ্যতা নিয়ে যাচাই বাছাই শুরু হলে অনেকেই নাখোশ হবেন, এক সময় আমিও ভাবতাম শিক্ষাগত যোগ্যতা সাংবাদিকতার জন্য বাধ্যবাধকতা হতে পারে না, কিন্তু আজ সাংবাদিকতা এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে সেখানে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ আমরা সাংবাদিকরা এই পেশাটির মান মর্যাদা ধরে রাখতে পারছি না। আমাদের মধ্যে প্রচুর অর্ধশিক্ষিত, ক্ষেত্রবিশেষ মূর্খসহ নানা ধান্দাবাজ ঢুকে পড়েছে। তাদের কারণেই সাংবাদিকতার নামে আজ অপসাংবাদিকতা বেড়েছে, দায়িত্বশীলতা কমেছে। রাস্তায় বের হলেই দেখা যায় সাংবাদিকের ছড়াছড়ি। পঞ্চম শ্রেণির গণ্ডি পার হতে পারেনি কিন্তু সাংবাদিকতার পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে শতশত টাউট বাটপার। আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার পাশাপাশি ঘরে বসে অনলাইন পোর্টাল খুলে নানা জায়গা থেকে নিউজ কপি পেস্ট করেও শতশত সাংবাদিক নামধারীর জন্ম হয়েছে অনেকে আবার কপি পেস্ট কি করে করতে হয় সেটাও জানেনা। যেমন,পানের দোকানদার, চায়ের দোকানি,ডিম ব্যবসায়ী,মুরগীব্যবসায়ী,মাদককারবারী,
হিরোইন্সি বাটপার ধান্ধাবাজ গলায় কার্ড ঝুলিয়ে এখন সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। ফেসবুকিং করে এমন অনেকেই নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাইকের সামনে প্রেস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার ভূয়া সাংবাদিক।
এক সময়,শুনতাম,ডাক্তার,ইন্জিনিয়ার,
শিক্ষক,রাজনীতিবিদ, চাকরিজীবী আইনজীবী,লেখক,কবি ও ব্যবসায়ীদের মত সাংবাদিকতাও একটি আলাদা পেশা এখন দেখি এটি ক্লাসের চতুর্থ বিষয়ের মত। সব পেশার লোকেরা এখন মুল পেশার সাথে সাংবাদিকতাকে এখন চতুর্থ বিষয় মনে করে, সাংবাদিকতা জানলেও কি না জানলেও কি, অর্থাৎ নিউজ করলেও কি, না করলেও কি গলায় তো একটি পত্রিকার কার্ড ঝুলানো আছে। অনেকে জাতীয় কবি নজরুলের উদাহরন দিয়ে বলে উনিওতো এসএসসি পাশ করেনি। ওনি কিভাবে সাংবাদিক হল, তারা আসলে জানেননা একজন কবি নজরুল শত বছরেও জন্মায়না। এরা ক্ষণজন্মা,একজন কবি নজরুল হতে হলে অনেক লেখাপড়া ও সাধনা করতে হয়। পারবেন নজরুলের মত একটি কবিতা লিখতে,যেমন,
বল বীর-
বল উন্নত মম শির।
একশ বছর পরেও সেই কবিতার আবেদন ফুরায়নি,রয়ে গেছে আগের মতোই।
রাস্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ সাংবাদিকতার স্বর্ণযুগ ফিরে আনতে হলে এই সমস্ত খোঁড়া যুক্তি ওয়ালা লোকদের হাত থেকে সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে অবশ্যই যোগ্যতার বিষয়টি ভাবতে হবে। সাংবাদিকদের সব সংগঠনের উচিত এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীকে সব রকমের সহায়তা করা এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইন ১৯৭৪ সংশোধন করা। সাংবাদিকতার মানোন্নয়ন ও পেশার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতেই এটা করতে হবে নয়তো নকল সাংবাদিকদের ভিড়ে আসল সাংবাদিকদের হারিয়ে যেতে হারিয়ে যেতে আর বেশিদিন সময় লাগবেনা।
লেখক,,,,,,,,

মোঃ নিজাম উদ্দিন খান
চট্টগ্রাম করেসপন্ডেন্ট
এশিয়ান টিভি।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড

অপসাংবাদিকতা রুখতে সাংবাদিকদের শিঘ্রই ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারন করে দেওয়া উচিত

আপডেট টাইম ০৮:৪৮:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম:

সবসময় শুনে থাকি সাংবাদিকতার ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণের বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখছে। দেশের প্রচলিত কোনো আইন বা নীতিমালায় সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতার কোনো বিধানও নেই। তবে এবার সময় হয়েছে যোগ্যতার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার। না হলে হলুদ আর অপসাংবাদিকতায় হারিয়ে যাবে সবুজ সাংবাদিকতা।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইন-১৯৭৪ সংশোধন করে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতার বিষয়টি অতিশিঘ্রই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত শুধু উচিতই নয় বাস্তবায়নও দ্রুত করতে হবে,কিন্তু সবসময় শুনি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে কিন্তু সেই শুনা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তবে এবার তথ্য মন্ত্রী এই বিষয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করবে বলে আমার বিশ্বাস। যারা সিনিয়র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় সুনামের সহিত কাজ করে আসছেন তারা ব্যতিত নতুন যারা এই পেশায় যুক্ত হতে চাই প্রেস কাউন্সিলের উচিত তাদের ক্ষেত্রে নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারন করে দেওয়া।
তা নাহলে সাংবাদিকতার এই মহান পেশা থেকে মহান মানুষগুলো হারিয়ে যাবে,একসময় এদেশে গুনি/দক্ষ সাংবাদিকের অভাব দেখা দিবে যা একটি রাস্ট্র বা দেশের জন্য অশনিসংকেত।

সাংবাদিক হতে হলে যে একটু পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণের দরকার আছে সেটা সবাই স্বীকার করলেও শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা বললে অনেকে ক্ষেপে যান। আশা করি এবার সরকার যোগ্যতার বিষয়টি বাস্তবায়ন করার লক্ষে গভীর চিন্তা ভাবনা করবে। দুনিয়ায় এমন কোনো পেশা নেই যেখানে শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের দরকার হয় না। বাংলাদেশেই শুধু সাংবাদিকতা করতে হলে কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা বা প্রশিক্ষণ লাগে না। যেখানে একজন সরকারী ড্রাইভার/পিয়ন/মালী ও প্লাম্বার মিস্ত্রী হতে হলে নুন্যতম যোগ্যতা অষ্টম শ্রেনীর সার্টিফিকেট লাগে সেখানে সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে যেন সাতখুন মাফ। তাহলে কি সাংবাদিকদের কি কেউ ক্ষেপাতে চাইনা। না হলে প্রেস কাউন্সিল এ ব্যাপারে হার্ড লাইনে যাচ্ছেনা কেন? বাংলাদেশের সাংবাদিকতা ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার এটা বুঝতে কারও বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

শুধু সাংবাদিক নয় সম্পাদকের বিষয়েও একই অবস্হা। সাংবাদিকদের সবচে বড় পদ হল সম্পাদক। এইদেশে পদটি রীতিমত ধর্ষিত ও কলংকিত। ক, লিখতে কলম ভাঙ্গে এমন অনেকেই সম্পাদক বনে গেছেন। তারা সম্পাদক হলেনই বা কী করে, কে তাদের অনুমোদন দিল, এসব নিয়ে আর আলোচনাই হয় না। সম্পাদকদের অনেকেই সম্পাদনা করেন না। তারা টাকার জোরে পত্রিকা প্রকাশ করেন আর আইনের ফাঁকফোকড় গলিয়ে তারা নিজেরাই সম্পাদক বনে যান। জীবনে একদিনের জন্যও সাংবাদিকতা করেননি কিন্তু সরকারের কাছে জমা দেওয়া বায়োডাটায় লিখা আছে ১৫ বছর সাংবাদিকতা করেছেন- এই দেশে এমন সম্পাদকের অভাব নেই । যেখানে সম্পাদকদেরই কোনো যোগ্যতা লাগে না সেখানে তার অধীনে সাংবাদিকদের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হাস্যকরই হবে বটে। নিশ্চয়ই এবার সম্পাদক হতে হলেও কমপক্ষে কী কী যোগ্যতা লাগবে সেটিও নির্ধারণের চেষ্টা করবেন সরকার। আর সেই যোগ্যতা কী রকম হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা জরুরি। বিষয়টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো সন্দেহ নেই। তাই অতি শ্রিঘ্রই এব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হওয়া উচিত। সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলদেশ- পিআইবি, প্রেস কাউন্সিল, গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট,এরকম যত প্রতিষ্ঠান রয়েছে সবখানেই এই আলোচনা দরকার। কারণ সাংবাদিকতার মান দিনকে দিন যে নিম্নগামী সেটা বুঝতে কারও গবেষক হওয়ার দরকার নেই, মাঠ পর্যায়ে আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি পেশাটি নীতি নৈতিকতা আর দক্ষতার মাপকাঠিতে অনেকটাই নিচে নেমে গেছে। পত্রিকার সম্পাদকরাও এই দায় এড়াতে পারেনা।

আমরা জানি সাংবাদিকদের যোগ্যতা নিয়ে যাচাই বাছাই শুরু হলে অনেকেই নাখোশ হবেন, এক সময় আমিও ভাবতাম শিক্ষাগত যোগ্যতা সাংবাদিকতার জন্য বাধ্যবাধকতা হতে পারে না, কিন্তু আজ সাংবাদিকতা এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে সেখানে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ আমরা সাংবাদিকরা এই পেশাটির মান মর্যাদা ধরে রাখতে পারছি না। আমাদের মধ্যে প্রচুর অর্ধশিক্ষিত, ক্ষেত্রবিশেষ মূর্খসহ নানা ধান্দাবাজ ঢুকে পড়েছে। তাদের কারণেই সাংবাদিকতার নামে আজ অপসাংবাদিকতা বেড়েছে, দায়িত্বশীলতা কমেছে। রাস্তায় বের হলেই দেখা যায় সাংবাদিকের ছড়াছড়ি। পঞ্চম শ্রেণির গণ্ডি পার হতে পারেনি কিন্তু সাংবাদিকতার পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে শতশত টাউট বাটপার। আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার পাশাপাশি ঘরে বসে অনলাইন পোর্টাল খুলে নানা জায়গা থেকে নিউজ কপি পেস্ট করেও শতশত সাংবাদিক নামধারীর জন্ম হয়েছে অনেকে আবার কপি পেস্ট কি করে করতে হয় সেটাও জানেনা। যেমন,পানের দোকানদার, চায়ের দোকানি,ডিম ব্যবসায়ী,মুরগীব্যবসায়ী,মাদককারবারী,
হিরোইন্সি বাটপার ধান্ধাবাজ গলায় কার্ড ঝুলিয়ে এখন সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। ফেসবুকিং করে এমন অনেকেই নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাইকের সামনে প্রেস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার ভূয়া সাংবাদিক।
এক সময়,শুনতাম,ডাক্তার,ইন্জিনিয়ার,
শিক্ষক,রাজনীতিবিদ, চাকরিজীবী আইনজীবী,লেখক,কবি ও ব্যবসায়ীদের মত সাংবাদিকতাও একটি আলাদা পেশা এখন দেখি এটি ক্লাসের চতুর্থ বিষয়ের মত। সব পেশার লোকেরা এখন মুল পেশার সাথে সাংবাদিকতাকে এখন চতুর্থ বিষয় মনে করে, সাংবাদিকতা জানলেও কি না জানলেও কি, অর্থাৎ নিউজ করলেও কি, না করলেও কি গলায় তো একটি পত্রিকার কার্ড ঝুলানো আছে। অনেকে জাতীয় কবি নজরুলের উদাহরন দিয়ে বলে উনিওতো এসএসসি পাশ করেনি। ওনি কিভাবে সাংবাদিক হল, তারা আসলে জানেননা একজন কবি নজরুল শত বছরেও জন্মায়না। এরা ক্ষণজন্মা,একজন কবি নজরুল হতে হলে অনেক লেখাপড়া ও সাধনা করতে হয়। পারবেন নজরুলের মত একটি কবিতা লিখতে,যেমন,
বল বীর-
বল উন্নত মম শির।
একশ বছর পরেও সেই কবিতার আবেদন ফুরায়নি,রয়ে গেছে আগের মতোই।
রাস্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ সাংবাদিকতার স্বর্ণযুগ ফিরে আনতে হলে এই সমস্ত খোঁড়া যুক্তি ওয়ালা লোকদের হাত থেকে সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে অবশ্যই যোগ্যতার বিষয়টি ভাবতে হবে। সাংবাদিকদের সব সংগঠনের উচিত এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীকে সব রকমের সহায়তা করা এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইন ১৯৭৪ সংশোধন করা। সাংবাদিকতার মানোন্নয়ন ও পেশার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতেই এটা করতে হবে নয়তো নকল সাংবাদিকদের ভিড়ে আসল সাংবাদিকদের হারিয়ে যেতে হারিয়ে যেতে আর বেশিদিন সময় লাগবেনা।
লেখক,,,,,,,,

মোঃ নিজাম উদ্দিন খান
চট্টগ্রাম করেসপন্ডেন্ট
এশিয়ান টিভি।