মাতৃভূমির খবর ডেস্কঃ অনলাইন ক্যাসিনো গুরু সেলিম প্রধানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় থাই এয়ারওয়েজের ব্যাংককগামী একটি ফ্লাইট থেকে তাকে গ্রেফতার করে নামিয়ে আনা হয়।
আরো পড়ুন : টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত ২
সেলিম প্রধান অনলাইনে ক্যাসিনো পরিচালনাকারী এবং বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রধান। তিনি ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সহ-সভাপতি। এছাড়া এর আগে গ্রেফতার হওয়া বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্যাশিয়ারও।
সেলিম প্রধানের ব্যাংককের পাতায়ায় বিলাসবহুল হোটেল, ডিসকো বারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে গুলশানের দুই নম্বর অ্যাভিনিউয়ের ৯৯ নম্বর সড়কের ১১/এ নম্বর বাড়ির চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় অভিযান চালান র্যাব-১-এর সদস্যরা। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে অভিযান চলে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিদেশে চলে যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে সেলিমকে আটক করা হয়। পরে তাকে র্যাব-১-এর কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানের ওই বাসায় অভিযান চালানো হয়।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিম। তিনি অনলাইন ক্যাসিনো জুয়ার সঙ্গে জড়িত। অনলাইন ক্যাসিনোর মাধ্যমে আয় করা টাকা তিনি বিদেশে পাচার করতেন।
র্যাবের অপর একজন কর্মকর্তা জানান, সেলিম প্রধান ‘প্রধান গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের অধীনে পি২৪ গেইমিং নামের একটি কোম্পানি আছে, যাদের ওয়েবসাইটেই ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসা রয়েছে। প্রধান গ্রুপের কোম্পানি জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপার্সের নাম রয়েছে ঢাকা চেম্বারের সদস্যদের তালিকায়। সেলিম প্রধানের অফিসের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে গুলশানে। সেখানেই পি২৪ গেইমিংয়ের অফিস। আর ফেইসবুক পেইজে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেলিম থাকেন থাইল্যান্ডে।
জানা যায়, সেলিম প্রধান দীর্ঘদিন জাপান ছিলেন। বছর দশেক আগে বাংলাদেশে আসেন। হাতিরপুল প্লানার্স টাওয়ারে একটি অফিস নেন। একপর্যায়ে তিনি ক্যাসিনো কারবারে জড়িয়ে পড়েন। তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ।
উল্লেখ্য, অনলাইনে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার পাশাপাশি নানা অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সেলিম প্রধান। এছাড়া তার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে একটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রটির দাবি, সেলিম প্রধান তারেকের বিভিন্ন নৈশ পার্টির জন্য সুন্দরী তরুণীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেন। এছাড়া স্পা বিউটি পার্লারগুলোতে যেসব ভিআইপিরা আসা-যাওয়া করতেন তাদের মনোরঞ্জনের জন্য সেলিম প্রধান পূর্ব ইউরোপিয়ান দেশগুলো থেকে তরুণীদের নিয়ে আসতেন। এছাড়া সিলেটের অবৈধ পাথর উত্তোলন এবং ভারত থেকে গরু চোরাচালানের কাজে তিনি জড়িত রয়েছেন।