ইঞ্জিনিয়ার ওয়াহিদ মুরাদ
খুলনা জেলা প্রতিনিধি–
বরিশাল জেলার চরকানম গ্রামের রাকিব ওরফে রাশেদ (২৩) পিতা-আসলাম হাওলাদার, ঢাকার তেজগাঁওয়ে একটি কোম্পানিতে চাকুরী করা অবস্থায় মাকছুদা আক্তার নীলা (২১) পিতা-বশার বিশ্বাস, সাং-গিমাডাঙ্গা, থানা-টুঙ্গীপাড়া, জেলা-গোপালগঞ্জ এর সহিত ফেসবুক এর মাধ্যমে পরিচয় হয়।
পরিচয় সূত্রে আসামী মাকছুদা আক্তার নীলার আমন্ত্রনে গত ইং-২৫/০৩/২৩ তারিখ বিকাল অনুমানিক ০৫.৩০ ঘটিকার সময় রাকিব ওরফে রাশেদ ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়ায় এসে নামে। সেখানে পূর্ব থেকে অপেক্ষমান মাকছুদা আক্তার নীলা বেড়ানোর কথা বলে রাশেদকে একটি ইজি বাইকে তোলে। কিছুদুর যাওয়ার পর উক্ত ইজি বাইকে আরো ৪/৫ জন লোক ওঠে, তখন মাকছুদা কৌশলে ইজি বাইক থেকে নেমে যায়। পথ থেকে উঠা ৪/৫ জন রাশেদকে মোল্লাহাট থানাধীন কামারগ্রাম সাকিনস্থ গুনির খালের মাথায় ফাকা জায়গায় আটক রেখে রাশেদের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গলায় চাকু ধরে মারপিট করতে থাকে এবং তার কাছে থাকা ১৯,৫০০/-টাকা খুন জখমের ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে আরো ১,৫০,০০০/-(এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা মুক্তিপন দাবি করে এবং মারপিট করে খুন জখমের ভয় দেখায়ে রাশেদের কান্নার শব্দ তার পরিবারের লোকজনদের শুনায়। রাশেদের পরিবার রাশেদকে উদ্ধারের জন্য বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানায় হাজির হয়ে থানা পুলিশের নিকট সহযোগীতা প্রার্থনা করলে মোল্লাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাশ তার সুনিপুন কৌশল ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোল্লাহাট থানা এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ২৬/০৩/২৩ তারিখ ভোর ০৪.০০ ঘটিকার সময় মোল্লাহাট থানাধীন কামারগ্রাম হতে রাশেদকে উদ্ধার করেন।
রাশেদ এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোল্লাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে একটি চৌকশ আভিযানিক দল মোল্লাহাট থানা ও গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া থানার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মাকছুদা আক্তার নীলা সহ প্রতারক চক্রের আরো ৩ জনকে আটক করেন। তারা সবাই গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থানার গিমাডাঙ্গা গ্রামের অধিবাসী। তাদের নাম এবং পিতার নাম নিম্নরূপ-
১ । কাদের সিকদার (২১) পিতা- নাসির শিকদার।
২ । খালিদ সেখ (১৯) পিতা- আকরাম সেখ ।
৩। সাজ্জাদ ফকির (১৬) পিতা- জুয়েল ফকির ।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। আসামীরা ফেসবুকে ফেইক আইডি ব্যবহার করে নিরীহ মানুষকে ফাঁদে ফেলে মোল্লাহাট সহ গোপালগঞ্জ, টুঙ্গীপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত প্রতারনামুলক অর্থ আদায় করে আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে একটি প্রতারক চক্র মানুষকে ফাদে ফেলে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার সহ মুল্যবান সামগ্রী ছিনতাই সহ জান মালের নানা রকম ক্ষতি সাধন করে আসছে।
আসামীদের বিরুদ্ধে মোল্লাহাট থানায় নিয়মিত মামলা রুজুর পর অত্র মামলার ভিকটিম রাশেদকে বিজ্ঞ আদালতে আইনী কার্যক্রম শেষে তার পরিবারের জিম্মায় প্রদান করা হয়। ধৃত ৪ (চার) আসামীকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে এবং পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোপালগঞ্জ সহ মোল্লাহাট থানা এলাকায় সাড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার ও ফেসবুকে অপরিচিত মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করার ক্ষেত্রে জনসাধারনকে সচেতন হওয়ার জন্য মোল্লাহাট থানা কর্তৃপক্ষ আহব্বান করেছেন।