রাশিয়া বিশ্বকাপে মিশন হেক্সার সম্পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে গিয়েছিল ব্রাজিল। সেলেসাওদের স্বপ্নসারথি ছিলেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার। সেই নেইমার চরমভাবে হতাশ করেছেন। খেলার থেকে বেশি আলোচনায় এসেছেন মাঠে ভান করে পড়ে থাকার অভিযোগে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ১৪ মিনিট সময় মাঠে শুয়ে থেকে নষ্ট করেছেন নেইমার। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা হয়ে এসেছে বেলজিয়ামের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ব্রাজিল বিদায় নেওয়ায়।
এত কিছুর পরও ব্রাজিল দলকে বরণ করে নিতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিল ব্রাজিল–সমর্থকেরা। সবার নজর ছিল নেইমারের দিকে। সাংবাদিকেরাও অপেক্ষা করছিলেন তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে দেখা দেননি নেইমার। অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেছেন।
নেইমারের এমন আচরণে বিরক্ত হয়ে ফোলহা নামের এক সাংবাদিক বলেছেন, দলের সেরা তারকার মতো আচরণ করছেন না নেইমার, ‘নেইমারের মনে রাখা উচিত, তাঁর আজকের এই অবস্থানের পেছনে সমর্থকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। তাঁর এত টাকার ব্যাংক ব্যালান্সও হয়েছে সমর্থকেরা মাঠে গিয়ে তাঁর খেলা দেখে বলেই। রাশিয়াতে ব্রাজিলের ভরাডুবির কারণ নিয়ে কথা না বলে সে কাপুরুষের মতো লুকিয়ে থাকতে পারে না।’
রাশিয়াতে নেইমারকে একবারও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়নি। ২০ কোটি ব্রাজিলিয়ান যাঁর দিকে তাকিয়ে, তিনি এভাবে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকলে অস্থিরতা তো বাড়বেই। বিশেষ করে এবারের দলটাকে নিয়ে প্রত্যাশা যে আকাশ ছুঁয়েছিল। বিশ্বকাপের আগে সবাই বলছিল, ব্রাজিলই সবচেয়ে ফেবারিট। তা তাদের দলও তো ছিল সেরা। এমন দল নিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর নেইমার আবেগঘন একটা পোস্ট দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। কিন্তু এটাকেই যথেষ্ট মনে করছে না ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম। তাদের কাছে যে বেশ কিছু প্রশ্ন আছে, যার উত্তর মিলছে না। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলে নেইমার নির্বোধের মতো কাজ করেছে বলে মনে করছে ব্রাজিলিয়ান মিডিয়া।
এমনকি পেলের সঙ্গে মাঝেমধ্যে নেইমারের যে তুলনা চলে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে খোদ ব্রাজিলিয়ানরাই। এ সম্পর্কে ব্রাজিলিয়ান মিডিয়ায় বলা হয়, ‘পেলে এমনিতেই সর্বকালের সেরা হননি। সান্তোসের হয়ে কেবল তাঁর গোলসংখ্যাও তাঁকে কিংবদন্তি হিসেবে তৈরি করেনি। পেলের আচরণই ছিল কিংবদন্তিতুল্য। তিনি কখনো কাউকে সাক্ষাৎকার দিতে অস্বীকৃতি জানাননি। পেলে নিজের সাক্ষাৎকার দেওয়াকে অনুগ্রহ মনে করতেন না, তিনি মনে করতেন, এটি তাঁর নৈতিক দায়িত্ব।’
কথাগুলো নিশ্চয়ই নেইমারের কানে গেছে। এত এত সমালোচনার জবাব নেইমার কবে, কীভাবে দেবেন, সেটি একমাত্র তিনিই বলতে পারবেন। তবে মুখে জবাব না দিয়ে খেলার মাঠেই জবাব দিতে বেশি পছন্দ করবেন নেইমার, তা বলাই বাহুল্য।